র্যানসমওয়্যার মূলত এক ধরনের বিশেষ ম্যালওয়্যার। সাইবার সন্ত্রাসীরা এর মাধ্যমে ডিজিটাল যেকোনো ডিভাইসের ক্ষতি করতে পারে। ব্যাংকের অর্থ থেকে চুরি হয়ে যেতে পারে ডিভাইসে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি। অর্থ প্রদানের মাধ্যমে এসব তথ্য উদ্ধার সম্ভব হলেও অনেক সময় গ্রাহক ফাইলগুলোয় পূর্ণ প্রবেশাধিকার পায় না। তাই ম্যালওয়্যার সবসময়ই ভয়ংকর। তাছাড়া বর্তমানে র্যানসমওয়্যার তৈরিকারক হ্যাকাররা ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিটকয়েন কিংবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থের লেনদেন করছে। তাই ক্রমেই এ ধরনের আক্রমণ বাড়ছে।
গত বছর সাইবার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট বড় ধরনের পদক্ষেপ নেয় ও সফল হয়। তারা সফলভাবে ২৩ লাখ ডলার বিটকয়েন উদ্ধার করে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিশোধিত তেলের বৃহত্তর পাইপলাইন কলোনিয়াল পাইপলাইন ঘটনায় ডার্কসাইট র্যানসমওয়্যার গ্যাংয়ের কাছ থেকেও অর্থ উদ্ধার করে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। পরের মাসে অন্য একটি র্যানসামওয়্যার গ্যাংকেও শায়েস্তা করে সরকারি সংস্থাটি।
অভিযানের বিপরীতে পাল্টা আঘাত হানতে শুরু করে সাইবার সন্ত্রাসীরা। বিশেষ করে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের পদক্ষেপের প্রত্যুত্তর হিসেবে ডিজিটাল সন্ত্রাসীরা আক্রমণ বাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি বছর একের পর এক আক্রমণ করছে তারা। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে ২০২২ সালেই সবচেয়ে বেশি র্যানসমওয়্যার আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের তুলনায় ২০২২ সালে এ আক্রমণের পরিমাণ বেড়েছে ৮০ শতাংশ। খবর টেকক্রাঞ্চ।
সাইবার অপরাধীরা সহজেই র্যানসমওয়্যারকে একটি পরিষেবা হিসেবে ব্যবহার করে বা পুনরায় ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী পদক্ষেপকে ফাঁকি দেয়। ক্লাউডফ্লেয়ারের সিইও ম্যাথিউ প্রিন্স টেকক্রাঞ্চকে বলেন, এটা স্পষ্ট যে র্যানসমওয়্যার আক্রমণ বাড়ছে। সেপ্টেম্বরে আমাদের গ্রাহক সমীক্ষায় প্রতি চারজন উত্তরদাতার মধ্যে প্রায় একজন র্যানসমওয়্যার আক্রমণ বা হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
শুধু পরিসংখ্যানগতভাবেই ২০২২ সালকে র্যানসমওয়্যার আক্রমণের শিকার হওয়া অন্যতম বছর বলা হচ্ছে না। পাশাপাশি হ্যাকাররা আক্রমণের ধরনও পাল্টেছে। গত বছর হ্যাকাররা অবকাঠামো ও আর্থিক পরিষেবা খাতগুলোর প্রতি বেশি মনোযোগী থাকলেও চলতি বছর বড় বড় প্রতিষ্ঠানের তথ্য লোপাটেই আগ্রহী।