লকডাউনের আবহে আরও বেশি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্রহী হয়ে উঠছে তরুণ-তরুনীরা। গৃহবন্দি অবস্থায় স্মার্টফোনে জায়গা করে নিয়েছে নতুন নতুন চ্যাটিং ও ভিডিও কলিং অ্যাপ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জার অ্যাপ। আর তাই আরও নতুন নতুুন ফিচার এনে ইউজারদের আকৃষ্ট করতে বদ্ধপরিকর জুকারবার্গ সংস্থার অ্যাপগুলো।
ফেসবুক মেসেঞ্জার অ্যাপ থেকে বিনামূল্যে ভিডিও কল ও ভয়েস কল করাসহ তথ্য আদান প্রদানের সুবিধার কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এর ব্যবহার। এছাড়া অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি ফিচার আনছে মেসেজিং প্লাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার ফেসবুকের সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। যা ইউজারদের হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জার ব্যবহারে আরও সুবিধা করে দেবে।

জানা যায়, মেসেঞ্জারে যুক্ত হচ্ছে ফেস আইডি, টাচ আইডি বা পাসকোড ব্যবস্থা। এতে ব্যবহারকারী মেসেঞ্জার ‘লক’ করে রাখতে পারবেন, যাতে অন্য কেউ ব্যক্তিগত বার্তা দেখতে না পারেন।
আবার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে আলাদা চারটি ডিভাইসে। অর্থাৎ, চারটি স্মার্টফোন থেকে একটি নম্বর ব্যবহার করেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট করতে পারবেন ইউজাররা। অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট করবে হোয়াটসঅ্যাপ। তবে এখনও সেই ফিচার দিনের আলো দেখেনি। যদিও অ্যাপের দাবি, এই নতুন ফিচারের মধ্যে দিয়ে সেই পথেই একধাপ এগোলো মেসেজিং অ্যাপ।
এ বিষয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট এনগ্যাজেট এক প্রতিবেদনে বলেছে, ফেসবুক বর্তমানে মেসেঞ্জারের নিরাপত্তা ফিচারগুলো নিয়ে পরীক্ষা করছে। এসব ফিচার চালু হলে ব্যবহারকারীকে তাঁর মেসেঞ্জারের ইনবক্সে ঢুকতে হলে পাসওয়ার্ড বা আইডি দিয়ে ঢুকতে হবে। ফোন আনলক করা থাকলেও মেসেঞ্জারে আইডি দিয়ে ঢুকতে হবে। অ্যাপ ছেড়ে যাওয়ার কতক্ষণ পর তা লক হবে, সে সময়ও ঠিক করে দেওয়ার সুবিধা থাকবে।

এনগ্যাজেটকে ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ব্যবহারকারীদের কাছে তাদের আরও বেশি পছন্দের ও নিয়ন্ত্রণের সুবিধা তুলে দিতে চাই, যাতে তাঁরা ব্যক্তিগত বার্তা সুরক্ষিত রাখতে পারেন। সম্প্রতি আমরা এ রকম ফিচার পরীক্ষা শুরু করেছি যাতে ডিভাইস সেটিংস ব্যবহার করে মেসেঞ্জার অ্যাপ খুলতে হবে। কেউ যাতে হুট করে বার্তা পড়ে ফেলতে না পারে, সে জন্যই প্রাইভেসির বাড়তি স্তর যুক্ত করা হচ্ছে।’
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ যে স্ক্রিনশট পোস্ট করেছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে একটি অ্যাকাউন্ট থাকলেই তা একাধিক ডিভাইসে ব্যবহার করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে অন্য ডিভাইসগুলোতে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক থাকতে হবে। তবে ঠিক কবে থেকে ইউজাররা এই ফিচারটি উপভোগ করতে পারবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। তাই টেক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো বিষয়টি এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ফেসবুক বার্তা হিসেবে মেসেঞ্জার চালু করে ৷ প্রথম দিকে এটিকে ফেসবুক চ্যাট নামে অতিবাহিত করা হতো৷ সংস্থাটি ২০১০ সালে তাদের বার্তা আদান-প্রদানের পরিষেবাটিকে আরও নবরূপে সূচীত করে, এরপর আগস্ট ২০১১-তে স্বতন্ত্রভাবে আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড এর জন্য অ্যাপ্লিকেশনটি উন্মুক্ত করে।
বর্তমানে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ফোনেই হোয়াটসঅ্যাপ করা যায়। তবে হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েবের মাধ্যমে সেই একই অ্যাকাউন্ট ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপেও খোলা যায়। কিন্তু অতটুকুই। একসঙ্গে একাধিক ডিভাইসে একই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা যায় না বলে হোয়াটসঅ্যাপ করতে হলে অন্য একটি নম্বর ব্যবহার করে খুলতে হয় নতুন অ্যাকাউন্ট। ইউজারদের এই সমস্যা মেটাতেই তৎপর ফেসবুক অধীনস্ত অ্যাপটি। কিন্তু তার জন্য ব্যবহারকারীদের কতদিন অপেক্ষা করতে হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন।
সূত্র: লাইভমিন্ট।