ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ৫:১৫ পূর্বাহ্ন

ছেঁউড়িয়ায় আজ শুরু হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব

উপমহাদেশের প্রখ্যাত মরমি সাধক, কবি ও মানবতাবাদী দার্শনিক ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস (১৭ অক্টোবর) শুক্রবার। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আখড়ায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসব। এবারই প্রথম জাতীয় পর্যায়ে আয়োজন করা হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্মরণোৎসব সফল করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন আয়োজকরা। স্মরণোৎসব ঘিরে বাউল, ভক্ত, সাধুদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে আখড়া প্রাঙ্গণ।

শুক্রবার বিকালে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হবে। অনুষ্ঠানমালা চলবে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত।

ছেউড়িয়ার আখড়ায় শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসব
এদিকে তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই হাজারো লালন ভক্ত-অনুসারী ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন। লালন মেলা উপলক্ষে কালী নদীপাড়ের মাঠে বসেছে মেলা।

সরেজমিন দেখা যায়, কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে বাউলভক্ত-অনুসারী তাবু গেড়ে আস্তানা তৈরি করেছেন। একতারা-দোতারাসহ নানা বাদ্যের তালে গেয়ে চলেছেন লালনের অমর বাণী। মাঠের দক্ষিণে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ এবং উত্তরে বসেছে নানা পণ্যসামগ্রীর দোকান। এ ছাড়া সমাধির পাশের উন্মুক্ত শেডের নিচেও বসেছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীরা। সেখানেও চলছে লালনের গান; আলোচনা হচ্ছে ফকির লালনের অমর সব বাণী নিয়ে।

স্থানীয় লালন অনুসারী ফারুক সাধু বলেন, ‘এখানে আসি মূলত সাঁইজির মর্মবাণী চর্চাসহ ভক্তদের উজ্জীবিত করা ও পরস্পর ভাব বিনিময়ের জন্য।’

১২৯৭ বঙ্গাব্দের পয়লা কার্তিক উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের দেহত্যাগের পর থেকে তার স্মরণে লালন একাডেমি ও জেলা প্রশাসন এমন আয়োজন করে আসছে।

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ লালনের এই আধ্যাত্মিক বাণীকে ধারণ করে এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে স্মরণোৎসব। গুরুকে স্মরণ ও তার দর্শন লাভ, অচেনাকে চেনা, জ্ঞান সঞ্চয়, আত্মার শুদ্ধি ও মুক্তির লক্ষ্যে এবং আত্মিক প্রশান্তির প্রয়াসে দেশ-বিদেশ থেকে লালন অনুসারী, ভক্ত, অনুরাগী ও দর্শনার্থীরা সাঁইজির ধামে আসতে শুরু করেছেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘প্রতিদিনই রাতে আখড়াবাড়ীর মূলমঞ্চে আলোচনা সভার পাশাপাশি অ্যাকাডেমির শিল্পী ও দেশবরেণ্য লালন শিল্পীরা লালন ফকিরের আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আখড়াবাড়ী চত্বরে কালী নদীর তীরে মাঠে বসেছে বিশাল লালন মেলা। আর এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে সিসি টিভি, ওয়াচ টাওয়ারসহ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ট্যাগঃ