নাইজেরিয়ার ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী রাষ্ট্রনায়ক, সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি আর নেই। ৮২ বছর বয়সে লন্ডনের একটি ক্লিনিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। রোববার (১৩ জুলাই) তার সহকারীর বরাতে এই খবর নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। বুহারি একাধারে ছিলেন কঠোর সামরিক শাসক, আবার পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একজন নেতৃস্থানীয় মুখ।
রোববার লন্ডনের এক ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুহাম্মাদু বুহারি। তার পরিবারের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, বিকেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ের মুখপাত্র গারবা শেহু এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মুহাম্মাদু বুহারি ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে আশির দশকে সামরিক শাসক হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছিলেন ‘ইস্পাত কঠোর’ হাতে।

বুহারির মৃত্যুতে নাইজেরিয়াজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু এক শোকবার্তায় জানিয়েছেন, তিনি বুহারির স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও জানান, ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশিম শেত্তিমাকে নির্দেশ দিয়েছেন ইংল্যান্ডে যেয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার আনুষ্ঠানিকতা দেখভাল করতে।
মুহাম্মাদু বুহারির রাজনৈতিক জীবন ছিল বৈচিত্র্যময়। আশির দশকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে তিনি কঠোর হাতে দেশ শাসন করেন। তবে সেই সামরিক শাসক এক সময় নিজেকে রূপান্তর করেন একজন গণতন্ত্রকামী নেতায়। ২০১৫ সালে তিনি প্রথমবারের মতো একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, যা দেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ পালাবদল হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি তখন তৎকালীন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে পরাজিত করে নতুন ইতিহাস গড়েন।
তার দুই মেয়াদে (২০১৫–২০২৩) বুহারি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তবে কিছু নীতিগত কঠোরতা এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তিনি সমালোচিতও হন। তথ্যসূত্র : এএফপি
