নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একসচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান হিসেবে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ গত ১৯ আগস্ট যোগদান করেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বেশ কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেন।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে শেয়ার বিক্রির চাপ যেমন বেড়েছে। পাশাপাশি কারসাজি করা শেয়ার থেকে দ্রুত বিনিয়োগকারীরা বের হয়ে আসছে, ফলশ্রুতিতে শেয়ারের বিক্রির চাপ বেড়ে গেছে, যেকারনে পতন ত্বরান্বিত হয় বাজারে, কমে যায় সূচক।
এর প্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কিছু বিনিয়োগকারী খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করেন। বাজারের এই পতনের জন্য সরাসরি তাকে দায়ী করে রাজধানীর মতিঝিলে ও আগারগাঁওয়ে বিএসইসির সামনে বিক্ষোভ করে। পাশাপাশি কমিশনের চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় বিক্ষোভকারীরা।
তাদের এই দাবির প্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বিজনেস আই বাংলাদেশকে যা বললেন-

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ-এর পদত্যাগ দাবি করা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। কঠোর পদক্ষেপে যদি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে তারা চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসতে পারেন। ভদ্রভাবে তার সাক্ষাৎ চাইতে পারেন। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। এভাবে কমিশনে তালা ঝুলিয়ে, চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে সমস্যার সমাধান হবে না।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর পরিচালক (রিসার্চ) ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, যারা পুঁজিবাজারকে ম্যানুপুলেট করেছে তাদেরকে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান সেই কাজটিই করছেন। এখন যদি বাজার ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের চরম ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। তাই কোনোভাবেই বর্তমান চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করা যুক্তিযুক্ত নয়। তাকে আরো সময় দিতে হবে।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) এর সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগকারীদের কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে কথা বলা আমার জন্য ঠিক হবে না। কারণ এটি খুব সেনসিটিভ ইস্যু। ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে এ ব্যাপারে আমার কথা না বলাই ভালো। কারণ আমরাতো তাঁর পদত্যাগ দাবি করিনি।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) এর সভাপতি গোলাম সামদানি বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কমিশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করতেই পারেন। কিন্তু আমি মনে করি পদত্যাগ দাবি করা যুক্তিযুক্ত নয়। চেয়ারম্যানকে আরো সময় দেয়া উচিত। আমাদের দেখতে হবে যারা মার্কেট ম্যানুপুলেট বা কারসাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে বর্তমান রেগুলেটর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন কিনা। পাশাপাশি রেগুলেটর যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে সেগুলো পুঁজিবাজার বান্ধব কিনা। বাজারের সূচক বাড়ানো বা কমানো রেগুলেটরের কাজ না। এটা বিনিয়োগকারীদের বুঝতে হবে। বিনিয়োগকারীদের উচিত কমিশনের চেয়ারম্যান যেসমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা। পাশাপাশি তাদের যদি বাজারবান্ধব কোনো দাবি থাকে, সেগুলো চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরা।