‘ইসলামপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী’ মোকাবিলায় ফ্রান্সে কঠোর আইন আনছেন এমানুয়েল ম্যাখোঁ। প্রস্তাবিত এই আইন নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সেখানে বিপরীত লিঙ্গের চিকিৎসক থেকে সেবা নিতে অস্বীকৃতি জানালে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানান দেশটির এক মন্ত্রী।
পার্লামেন্টে উঠতে যাওয়া এই বিলের কিছু প্রস্তাব সম্পর্কে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই। যেমন, মসজিদগুলোতে কীভাবে অর্থ আসছে, তা দেখা হবে। ধর্মীয় সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

ম্যাখোঁর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার মাঝে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন। তিনি একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফ্রান্স এখন চরমপন্থী মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে।
প্রস্তাবিত বিল নিয়ে তার বক্তব্য, কোনো পুরুষ যদি চিকিৎসকের কাছে যান এবং বলেন নারী ডাক্তারের কাছে তিনি চিকিৎসা করাবেন না, তা হলে পাঁচ মাসের জেল ও ৭৫ হাজার ইউরো জরিমানা হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে নারীদের ক্ষেত্রেও।
কোনো সরকারি কর্মকর্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করলে বা কোনো শিক্ষকের কাছে পড়তে না চাইলেও শাস্তি হবে।

এরপরেই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। বিশেষ করে চিকিৎসক বা নার্সের কাছে চিকিৎসা নিতে অস্বীকার করলে জেলে যেতে হবে, বিপুল ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, এই ব্যবস্থার সমালোচনায় মুখর হন বিশিষ্টজন ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের অনেকেই।
জানা গেছে, এই বিল আনা হবে ডিসেম্বরে। ১৯০৫ সালে রাষ্ট্র থেকে চার্চকে আলাদা করতে আইন আনা হয়েছিল। সেই আইনকেই সংশোধন করে নতুন ব্যবস্থাগুলো যুক্ত করা হবে।
তবে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য নতুন নয়। শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির হত্যার পর তিনি বলেছিলেন, সুপারমার্কেটে হালাল ও কোশার খাবার দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। তার কাছে, এটাও বিচ্ছিন্নতাবাদের উদাহরণ।
এর আগে হত্যার শিকার প্যাটিকে মরণোত্তর লিজিয়ন অফ অনারে ভূষিত করে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ বলেন, “আমরা কার্টুন ছাড়বো না৷ ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে রক্ষা করতে গিয়ে প্যাটি জীবন দিয়েছেন । তিনি এই প্রজাতন্ত্রের মুখ।”
মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন নিয়ে ফরাসি সরকারের এমন মন্তব্যে মুসলিম বিশ্ব থেকে এসেছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। পণ্য বয়কট ও বিক্ষোভ চলছে অনেক দেশে।