ঢাকা, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫, ৭:১৭ অপরাহ্ন

গোপালগঞ্জে ইউপি সদস্যের উপর হামলা, সন্ত্রাসী আলীম মোল্লা আটক

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বোড়াশী ইউনিয়নের বর্তমান ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিটু মোল্লার ওপর সন্ত্রাসী হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১নং বোড়াশী ইউনিয়নের ভেন্নাবাড়ি এলাকার মোঃ আলীম মোল্লাকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭ টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে তাকে আটক করা হয়।

অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছ, আলিম মোল্লা ভেন্নাবাড়ি এলাকায় হামলা, প্রাণনাশের হুমকি ও তিনজন আইনজীবীর নিকট ছয় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। যৌথ বাহিনী তাকে আটক করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় সোপর্দ করেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১শে মার্চ রাত আনুমানিক সোয়া ১২টার দিয়ে মিটু মোল্লা ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস,এম জিলানীর সাথে দেখা করে পাটগাতি থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন তিনি। হামলার ঘটনা ঘটে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ইউনিয়নের উত্তর বাশুড়িয়া আইয়ুব আলীর বাড়ির রাস্তার পাশে। সন্ত্রাসীরা মিটু মোল্লাকে দেশীয় অস্ত্র (চাইনিজ কুড়াল, রামদা, দা ও হাতুড়ি) দিয়ে কুপিয়ে মর্মান্তিকভাবে জখম করে মৃত ভেবে পাশের এক পুকুরের ভিতরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় মিটু মোল্লাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মিটু মোল্লার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

এ ব্যাপারে টুঙ্গিপাড়া থানায় মিটু মোল্লার ছেলের শ্বশুর আমানত মুন্সী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় নওশের মোল্লা ও আলীম মোল্লাকে প্রধান আসামী করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলা রুজু করেন। যার নাম্বার ৩২/২০২৫ ইং।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, নওশের মোল্লা ও আলীম মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক অপকর্ম সংঘটিত করছে। আলীম মোল্লার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী হিসাবে একাধিক মামলা রয়েছে। আলীম মোল্লা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় অপকর্ম করে পার পেয়ে যায়। তিনি একসময় জাকের পার্টির গোপালগঞ্জ-২ আসনের এমপি হিসাবে আবার কখনও আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস-২ এর হাত ধরে আবার বর্তমানে গোপালগঞ্জ বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করে চলেছে। এর আগে গত ১৭ মার্চ বিকালে আলীম মোল্লা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ক্ষমতার দাপটে ভেন্নাবাড়ি এলাকার সাইদ মোল্লার দোকানের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। সাইদ মোল্লা নিষেধ করলে তার ওপর হামলা চালায় আলীম মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। হামলাকারীরা দোকানের মালামালসহ প্রতিবাদকারীর গলার চেইনও লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এসব তথ্য পাওয়া যায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় ইসমাইল মোল্লা বাদী হয়ে করা মামলার লিখিত এজাহারে। যার মামলা নম্বর-২৮/২০২৫ (গোপাঃ জি.আর- ১২২/২৫)। অভিযোগ রয়েছে গত ১৯ মার্চ গোপালগঞ্জ আদালতের আইনজীবী মো. সাইদ হোসেন, নাফিজুর রহমান, রুহুল আমিনকে ভেন্নাবাড়ি মুন্সীবাড়ি স্কুলের পাশের রাস্তার ওপর জনসমক্ষে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে, এসময় মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে এ্যাড. মো. সাইদ হোসেনের নিকট থেকে ৫৫ হাজার টাকা, এ্যাড. নাফিজুর রহমানের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এই আলীম মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ভুক্তভোগীরা জানান, সন্ত্রাসীরা তাদের ঘাড়ের উপর রামদা ধরে রেখে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় পরবর্তীতে আরও টাকা আদায় করার জন্য। এ ব্যপারে গোপালগঞ্জ সদর থানায় আলীম মোল্লা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজীর মামলা রুজু হয়েছে, যার মামলা নং গোপাঃ – ১৪০/২৫। অভিযুক্ত আলীম মোল্লার কাছে মুঠফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওরা যে সকল মামলা করেছে তা সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা মামলা। এলাকার দলাদলির রেষারেষিতে আমাকে মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

 

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন