ঢাকা, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫, ১:৫৯ পূর্বাহ্ন

দ্বিতীয় দিনে বেক্সিমকোর ১৬ হাজার শ্রমিক পেল ৫৫ কোটি টাকা

বেক্সিমকো শিল্পপার্কের লে-অফ করা ১৪টি কারখানার আরও ১৬ হাজার ১৪২ শ্রমিককে পাওনা বাবদ ৫৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে পাওনা পরিশোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবার এই বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হয়।

এর আগে গত রোববার প্রথম দিনে বন্ধ হয়ে যাওয়া দুই প্রতিষ্ঠানের ২৪৫ জন শ্রমিকের ৮০ লাখ টাকা পাওনা পরিশোধ করা হয়েছিল।

বেক্সিমকোর মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান খালিদ শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সোমবার বেক্সিমকোর সাতটি পোশাক কারখানার মোট ১৬ হাজার ১৪২ জন শ্রমিকের পাওনা দাবির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। গত দুদিনে ৯টি পোশাক কারখানার সকল পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। অবশিষ্ট কারখানার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’

বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেক্সিমকো শিল্পপার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৪টি তিষ্ঠানের মোট শ্রমিকসংখ্যা ৩১ হাজার ৬৭৯ জন। আর কর্মচারীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৬৫ জন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ৬ মার্চ বেক্সিমকোর বন্ধ ঘোষিত এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে সরকার। ঋণ হিসেবে কোম্পানিটিকে এই অর্থ দিয়েছে সরকার। ওই দিন বেক্সিমকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওসমান কায়সার চৌধুরীর কাছে ওই চেক হস্তান্তর করেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ওই সময় জানানো হয়, ৯ মার্চ থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ শুরু হবে। সেই অনুযায়ী রোববার দুপুরের পর ২৪৫ জন শ্রমিককে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্রমিকদের পাওনা বাবদ দেওয়া অর্থ নগদে পরিশোধ করা হয়নি। পাওনার পুরো অর্থ হয়, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা এমএফএস হিসাবে বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান। ১৩ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। ২৯ আগস্ট সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠানটির ঋণপত্র বা এলসি–সুবিধাও বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে বেক্সিমকো শিল্পপার্কের প্রতিষ্ঠানগুলো। কাঁচামালের সংকটে কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এমন পটভূমিতে সরকারের পক্ষ থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সিদ্ধান্তে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অর্থে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে।

 

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন