ঢাকা, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩:৩০ পূর্বাহ্ন

বৈদেশিক ঋণের ব্যবহার বাড়াতে চায় সরকার

অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় দেশে অর্থের প্রবাহ দ্রুতগতিতে বাড়াতে চায় সরকার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ঋণ ও অনুদান ব্যবহারেও বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য যেসব প্রকল্পের ব্যাপারে সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি, সেসব প্রকল্পের চুক্তি দ্রম্নত করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ঋণে চার বড় প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করেন। সভার কার্যপত্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কার্যপত্রের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রকল্প’ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এ প্রকল্পের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, অগ্নিজনিত দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি হ্রাস, শিক্ষার উন্নয়ন ও সুযোগ সৃষ্টি, সামাজিক সেবা প্রদান ব্যবস্থার উন্নতিসাধন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমানোসহ আশিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক বলপ্রয়োগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে। সংশোধিত প্রকল্পটির মাধ্যমে সব কক্সবাজার জেলার সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্প এলাকা হিসেবে টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার পাশাপাশি বাকি ছয়টি উপজেলাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রায় পুরোটাই সাহায্যের অর্থে এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা।

এ প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব সভায় জানান, সংশোধিত ডিপিপি অদ্যাবধি অনুমোদন না হওয়ায় চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি।

এ প্রসঙ্গে সভার সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, দ্রম্নত সময়ের মধ্যে পুনর্গঠিত ডিপিপি বিধি মোতাবেক পর্যালোচনা করে অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করতে হবে।

সভায় ‘ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর অ্যান্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্প’র বিষয়েও আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ তাদের উপস্থাপনায় উলেস্নখ করে যে, বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতুর অবকাঠামো ও কৌশলগত সুবিধা ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কাঙ্‌িক্ষত আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সহজ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা আনার জন্য ২৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভোমরা-সাতক্ষীরা-নাভারন-যশোর-ঝিনাইদহ-বনপাড়া জাতীয় মহাসড়ককে দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীতকরণের মাধ্যম এটিকে ‘অর্থনৈতিক করিডোর’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকায় কৃষি উন্নয়ন, নাগরিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ প্রাসঙ্গিক জনকল্যাণমূলক ক্ষেত্রসমূহে বিনিয়োগ করা হবে। বিশ্বব্যাংক ও এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের অর্থে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।

এ প্রকল্পের বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, দ্রম্নত সময়ের মধ্যে পুনর্গঠিত ডিপিপি স্থানীয় সরকার কর্তৃক পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে হবে। এরপর ডিপিপি পর্যালোচনা করে তা অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপন করতে হবে।

সভায় বাংলাদেশ প্রাইভেট এনহ্যান্সমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল এন্ট্রাপ্রেনিউর প্রকল্পের বিষয়েও আলোচনা হয়। এ বিষয়ে বেজা ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের উপস্থাপনায় উলেস্নখ করে যে, দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের মাধ্যমে শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন