ভেনেজুয়েলার জ্বালানি তেলকে বিশ্ববাজার থেকে অন্তত দুমাসের জন্য বিচ্ছিন্ন করে রাখতে (কোয়ারেন্টাইন) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মার্কিন সেনাবাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, সামরিক শক্তি প্রয়োগ সবসময়ই একটা বিকল্প, তবে হোয়াইট হাউজের কাঙ্ক্ষিত ফলের জন্য প্রাথমিকভাবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগেই জোর দেওয়া হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে ভেনেজুয়েলা বিষয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সংযত থাকলেও, ব্যক্তিগতভাবে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে সরে দিতে চাপ দিচ্ছেন বলে আগের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। এদিকে সোমবার ট্রাম্প বলেন, ক্ষমতা ছাড়লে মাদুরোর জন্য তা ‘বুদ্ধিমানের’ কাজ হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলো মাদুরোর ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যাপক সুবিধা না দিলে ভেনেজুয়েলা গুরুতর অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়বে।
অবশ্য কথিত এই কোয়ারেন্টিন কার্যকরে সামরিক বাহিনীর ‘প্রায় একচেটিয়া’ মনোযোগ কীভাবে দেওয়া হবে—তা স্পষ্ট করেননি ওই কর্মকর্তা। ক্যারিবিয়ানে ইতোমধ্যে ১৫ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র- এর মধ্যে একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, আরও ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনের বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান আছে।

যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের জন্য বহুদিন ধরেই ভেনেজুয়েলার দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে আসছেন ট্রাম্প। তার প্রশাসন মাসের পর মাস ধরে লাতিন অঞ্চল থেকে আসা সন্দেহভাজন নৌযানে হামলা চালাচ্ছে। ট্রাম্প স্থলভাগে মাদক অবকাঠামোতে বোমা হামলার হুমকিও দিয়ে আসছেন এবং কারাকাসকে লক্ষ্য করে গোপন সিআইএ তৎপরতার অনুমোদন দিয়েছেন।
ডিসেম্বরেই মার্কিন কোস্টগার্ড ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেলে ভরা দুটি ট্যাংকার আটক করেছে। এছাড়া, চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ ঘোষণা করেন। তবে ‘অবরোধ’-এর বদলে ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দ ব্যবহারে ১৯৬২ সালের কিউবা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের সময়কার শব্দচয়নের পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে—যখন যুদ্ধ এড়াতে জন এফ কেনেডির প্রশাসন একই শব্দ ব্যবহার করেছিল। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বুধবার এ উদ্যোগকে “অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসন” হিসেবে সমালোচনা করেছেন।
এদিকে, জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার স্থায়ী প্রতিনিধি স্যামুয়েল মনকাদা মঙ্গলবার বলেন, ভেনেজুয়েলা নয়, বরং মার্কিন সরকারই আসল হুমকি।
সূত্র: রয়টার্স


















