ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে এমন কীর্তি আগে কখনও দেখা যায়নি। ম্যাচ তখন হেলে পড়ছে প্রতিপক্ষের দিকেই, জয়ের স্বপ্ন দেখছে ব্যাটিং দল। ঠিক সেই মুহূর্তেই এক ওভারে সবকিছু ওলটপালট করে দিলেন এক পেসার। ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম তুলে রেখে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন এক অধ্যায় লিখলেন ইন্দোনেশিয়ার গেদে প্রিয়ন্দানা।
কাম্বোডিয়ার বিপক্ষে আট ম্যাচের টি–টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রিয়ন্দানা হয়ে উঠলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ২৮ বছর বয়সী এই ডানহাতি ফাস্ট বোলার টি–টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এক ওভারে পাঁচ উইকেট শিকার করার বিরল কৃতিত্ব গড়েছেন—পুরুষ ও নারী ক্রিকেট মিলিয়েই যা একেবারে নজিরবিহীন।
ম্যাচের মোড় ঘোরানো সেই ওভারটি আসে ইনিংসের শেষ ভাগে। তখন কাম্বোডিয়ার প্রয়োজন ছিল ৫ ওভারে ৬২ রান, হাতে ছিল পাঁচ উইকেট। চাপের মুহূর্তে আক্রমণে এসে নিজের প্রথম ওভারেই প্রিয়ন্দানা ছিনিয়ে নেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। টানা তিন বলে তুলে নেন শাহ আবরার হোসেন, নির্মলজিৎ সিং ও চানথোয়েন রাতানাক—পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। পরের বলটি ডট হলেও, পরের ডেলিভারিতে ফেরান মংদারা সোককে। একটি ওয়াইডের পর শেষ বলে প্যাভ ভেনাককে আউট করে সম্পূর্ণ করেন ঐতিহাসিক পাঁচ উইকেটের ওভার।
শেষ দুই অ্যাশেজ টেস্টে খেলবেন না কামিন্স
এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কাম্বোডিয়া। ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তারা অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১০৭ রানে। ফলে ৬০ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় ইন্দোনেশিয়া।
এর আগে ব্যাট হাতেও অবদান রেখেছিলেন প্রিয়ন্দানা। ওপেনিংয়ে নেমে করেন ১১ বলে ৬ রান। তবে ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নায়ক ছিলেন তার সঙ্গী ধর্মা কেসুমা, যিনি ৬৮ বলে ১১০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন—আটটি চার ও ছয়টি ছক্কায় সাজানো সেই ইনিংসই ইন্দোনেশিয়াকে এনে দেয় লড়াই করার মতো পুঁজি।
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে এর আগে ঘরোয়া পর্যায়ে এক ওভারে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে মাত্র দুইজনের—বাংলাদেশের আল-আমিন হোসেন এবং ভারতের অভিমন্যু মিঠুন। তবে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে এতদিন সর্বোচ্চ ছিল এক ওভারে চার উইকেট নেওয়ার ১৪টি ঘটনা। সেই সীমারেখা ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেলেন গেদে প্রিয়ন্দানা।
এক ওভারে পাঁচ উইকেট—টি–টোয়েন্টির দ্রুতগতির ক্রিকেটে যা প্রায় কল্পনাতীত। আর সেই কল্পনাকেই বাস্তবে রূপ দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজের নাম স্থায়ীভাবে লিখে ফেললেন ইন্দোনেশিয়ার এই পেসার।