ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৫৭ অপরাহ্ন

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে ড্রোন হামলায় জাতিসংঘের স্থাপনায় কর্মরত ৬ জন শান্তিরক্ষী নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। হতাহতরা সবাই আবেইতে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী নিরাপত্তা বাহিনীতে (ইউএনআইএসএফএ) কর্মরত বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টের সদস্য ছিলেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পাশাপাশি নিহত শান্তিরক্ষীদের পরিবারের প্রতি ‘গভীর সমবেদনা’ জ্ঞাপন করেছেন। একইসঙ্গে তিনি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) কর্ডোফানের মধ্যাঞ্চলীয় কাদুগলি শহরে অবস্থিত শান্তিরক্ষী সরবরাহ ঘাঁটিতে এই ভয়াবহ হামলাটি ঘটে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিহত ৬ জন ও আহত ৮ জন শান্তিরক্ষীই বাংলাদেশের নাগরিক। তারা সবাই জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী নিরাপত্তা বাহিনী আবেইতে কর্মরত ছিলেন।

আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী সরবরাহ ঘাঁটিতে যে ভয়াবহ ড্রোন হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে করা হামলা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধের শামিল। দক্ষিণ কর্ডোফানে শান্তিরক্ষীদের ওপর আজকের হামলা অযৌক্তিক। এর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’

সুদানের সেনাবাহিনী এই হামলার জন্য আধা-সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে দায়ী করেছে। উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী ও আরএসএফ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত। তবে এ ঘটনায় আরএসএফের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এই হামলা ‘বিদ্রোহী মিলিশিয়া ও এর পেছনে যারা আছে তাদের ধ্বংসাত্মক মনোভাব স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে’। সেনাবাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, যেখানে জাতিসংঘের স্থাপনাটির ওপরে ঘন কালো ধোঁয়ার স্তূপ দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই হামলায় ‘গভীর শোক’ প্রকাশ করেছেন। তিনি জাতিসংঘের কাছে তার দেশের সেনাদের ‘যেকোনো প্রয়োজনীয় জরুরি সহায়তা’ প্রদান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘এই কঠিন মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার তাদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াবে।’

তেল সমৃদ্ধ আবেই হলো সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে একটি বিতর্কিত অঞ্চল। ২০১১ সাল থেকে সেখানে জাতিসংঘ মিশন মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বৃহত্তম অবদানকারী দেশগুলির মধ্যে একটি। ইউএনআইএসএফএ-এর চার হাজার পুলিশ ও সৈন্য এই অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য নিয়োজিত।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সুদানে দ্রুত যুদ্ধ যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ট্যাগঃ