বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগে অন্যান্য দেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে তুলনামূলকভাবে বেশি সুবিধা দেওয়া হতো। দুই দেশের আলোচনার পর মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্টদের জন্য আনুষ্ঠানিক মানদণ্ড ঘোষণা করেছে, যাতে তারা বৈধভাবে শ্রমিক পাঠাতে পারে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশি এজেন্টরাও এখন সমান সুযোগ পাবে।
গতকাল, সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সভায় মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের মানদণ্ড নির্ধারণ এবং তা বাংলাদেশকে জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর ফলে আগামীতে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের রিক্রুটিং এজেন্টদের অভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে নির্বাচিত করা হবে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ আগে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য দেশের এজেন্সিগুলো বেশি সুযোগ পেত। বর্তমান সরকারের অনবরত তাগিদ ও আলোচনা শেষে এই সমতা অর্জিত হয়েছে।

নির্ধারিত মানদণ্ডের মধ্যে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্টদের জন্য ১০টি শর্ত রয়েছে। এগুলো হলো:
১. লাইসেন্স পাওয়ার পর অন্তত ৫ বছর সন্তোষজনকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা।
২. গত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী বিদেশে প্রেরণের প্রমাণ।
৩. অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণের অভিজ্ঞতা।
৪. প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন ও নিয়োগ সংক্রান্ত বৈধ লাইসেন্স।
৫. সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষ থেকে সদাচরণের সনদ।
৬. জোরপূর্বক শ্রম, মানবপাচার, অর্থপাচার বা অন্য কোনো অপরাধে জড়িত না থাকা।
৭. নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র, যেখানে আবাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও দিকনির্দেশনা মডিউল থাকবে।
৮. অন্তত ৫ জন আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার ইতিবাচক প্রশংসাপত্র।
৯. কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী অফিস, যেখানে কর্মী বাছাই ও নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।
১০. পূর্বে মালয়েশিয়া বা অন্যান্য গন্তব্য দেশে কর্মী প্রেরণের সময় আইনসম্মত প্রক্রিয়া অনুসরণের প্রমাণ।
এই শর্ত পূরণকারী বৈধ লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্টদের তালিকাভুক্ত করতে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়া সরকারের কাছে অনুরোধ জানাবে। যেসব এজেন্ট এই শর্তগুলো পূরণে সক্ষম, তাদের আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।



















