বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন প্রায় ৩০ হাজার কর্পোরেট কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) থেকে এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে অ্যামাজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র। ২০২২ সালের পর এটি হবে সবচেয়ে বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা। ২০২২ সালের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২৭ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
অ্যামাজনের মোট কর্মীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫০ হাজার। তবে এর করপোরেট কর্মী প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার। ফলে কর্মীর দিক থেকে এই সংখ্যা ক্ষুদ্র হলেও, করপোরেট অংশের কথা চিন্তা করলে এই ছাঁটাইয়ের সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ।
সূত্র জানিয়েছে, মহামারির ব্যাপক চাহিদার সময় অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ এবং খরচ কমাতে প্রতিষ্ঠানটি এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতেও অ্যামাজনের কিছু কিছু বিভাগ যেমন: ডিভাইস, যোগাযোগ এবং পডকাস্টিংয়ে ছোট ছোট পদের সংখ্যা কমানো হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া ছাঁটাইয়ের মধ্যে পিপল এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (পিএক্সটি) নামে পরিচিত মানবসম্পদ বিভাগ, অপারেশনস, ডিভাইস অ্যান্ড সার্ভিসেস এবং অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মী পড়তে পারেন।
তিনটি সূত্র আরও জানিয়েছে, ওই সব বিভাগের ব্যবস্থাপকদের ই–মেইল নোটিফিকেশন পাঠানো রয়েছে। এতে কর্মীদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করতে হবে, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
অ্যামাজনের সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি বলছেন, কোম্পানিতে অতিরিক্ত প্রশাসনিক জটিলতা ও ব্যবস্থাপকের সংখ্যা কমানো হচ্ছে।
জ্যাসি জুনে বলেছিলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের কারণে ভবিষ্যতে সম্ভবত আরও কর্মী ছাঁটাই করা হতে পারে। বিশেষ করে পুনরাবৃত্তিমূলক ও রুটিন কাজ স্বয়ংক্রিয় করার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। কারণ, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অ্যামাজন সম্ভবত এআই-চালিত কাজের ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এছাড়া এই ছাঁটাইয়ের আরেকটি কারণ হলো, চলতি বছরের শুরুর দিকে কর্মীদের সপ্তাহে ৫ দিন অফিসে ফিরিয়ে আনার যে কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তা প্রযুক্তিক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন পদক্ষেপের একটি। বাড়িতে বসে কাজ করার কারণে যারা প্রতিদিন অফিসে আসছেন না, তাদের কাউকে কাউকে বলা হচ্ছে, তারা স্বেচ্ছায় অ্যামাজন ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের কোনও ছাঁটাই ভাতা ছাড়াই চলে যেতে হবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির কিছু আর্থিক সঞ্চয়ের সুযোগ তৈরি হবে।