আজ দেশের ব্যান্ডসংগীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর সকালে এই সংগীত মহারথী চলে গিয়েছিলেন না ফেরার দেশে। কিন্তু তাঁর গিটার, কণ্ঠ আর সুরের জাদু আজও বাজে প্রজন্মের পর প্রজন্মের হৃদয়ে।
চার দশকের সংগীতজীবনে আইয়ুব বাচ্চু শুধু একজন ব্যান্ড শিল্পীই নন, তিনি ছিলেন বাংলা রকসংগীতের অনুপ্রেরণা, এক অবিচ্ছেদ্য আবেগ। ‘চলো বদলে যাই’, ‘রূপালি গিটার’, ‘সেই তুমি’ —এই গানগুলো শুধু শ্রোতার কান ছুঁয়েছে তা নয়, হয়ে উঠেছে প্রজন্মের কণ্ঠে ভালোবাসার আর বেঁচে থাকার প্রতীক।

শুধু ব্যান্ডসংগীতেই নয়, আইয়ুব বাচ্চু আধুনিক গান, লোকগীতি ও চলচ্চিত্রের সংগীতেও রেখেছেন গভীর ছাপ। একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি ছিলেন বাংলা সংগীতের এক বহুমাত্রিক প্রতিভা।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া আইয়ুব বাচ্চু ১৯৭৮ সালে “ফিলিংস” ব্যান্ডে যোগ দিয়ে সংগীতজীবন শুরু করেন। পরে গঠন করেন এলআরবি (Love Runs Blind) যা বাংলা ব্যান্ডসংগীতকে নতুন এক যুগে নিয়ে যায়। তাঁর গিটারের সুর, মঞ্চে উন্মাদনা, আর সহজ-সাবলীল গায়কী তাঁকে পরিণত করেছিল এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী শিল্পীতে।
ব্যান্ডসংগীতের পাশাপাশি একক ক্যারিয়ারে আইয়ুব বাচ্চু অর্জন করেছিলেন আকাশছোঁয়া সাফল্য। তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’ এবং দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’ দিয়েই শুরু হয়েছিল সেই স্বর্ণযাত্রা। এরপর ১৯৯২ সালে এলআরবি প্রকাশ করে দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম ‘এলআরবি ১’ ও ‘এলআরবি ২’ যা বাংলা ব্যান্ডসংগীতে নতুন ইতিহাস রচনা করে। পরের বছর প্রকাশিত ‘সুখ’ অ্যালবামটি তাঁকে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার শীর্ষে, হয়ে ওঠে সর্বকালের অন্যতম সফল অ্যালবাম।

আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন তরুণ শিল্পীদের প্রেরণার উৎস। ব্যান্ডসংগীতের সংকটময় সময়ে তিনি নতুন প্রজন্মকে সাহস দিয়েছেন, নিজ খরচে করেছেন মঞ্চ আয়োজন, সহযোগিতা করেছেন অগণিত শিল্পীকে।


















