ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে ঢাকায় যাওয়ার জন্য রাজশাহীতে রেল বিভাগের বরাদ্দ করা বিশেষ ট্রেনটি পছন্দ না হওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন কর্মসূচিতে যোগ দিতে আগ্রহীরা ছাত্র-জনতা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ৭টা ১০ মিনিটের দিকে এই ব্লকেট কর্মসূচি শুরু করে। ফলে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ৪৫ মিনিট বিলম্বে রাজশাহী স্টেশন ছেড়ে যায়।

ব্লকেট কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিশেষ ট্রেন হিসেবে আমাদের জন্য যে ট্রেনটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা খুবই নিম্নমানের। ট্রেনটি দেখার পর আমাদের মন খুব খারাপ হয়ে যায়। এজন্য আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য রেল লাইনে অবস্থান নিই। কিন্তু অন্য কোন ট্রেন না থাকায় বাধ্য হয়ে সেই ট্রেনেই রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি।
এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো. শহিদুল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার যে ট্রেন বরাদ্দ দিয়েছে আমরা সেই ট্রেনই দিয়েছি। ট্রেনটির নন এসি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পছন্দ হয়নি। এজন্য তারা বিশেষ ট্রেনটি আটকে দিয়ে রেল লাইনে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ট্রেনটি সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ট্রেনটি আটকে দেয়ায় ট্রেনটি ৫৩ মিনিট বিলম্বে ৮টা ১৩ মিনিটে বিশেষ ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশন ছেড়ে যায়।
তিনি বলেন, ঢাকাগামী সিল্কসিটি ট্রেন সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে সেটি ৪৫ মিনিট বিলম্বে ৮টা ২৫ মিনিটে রাজশাহী স্টেশন ছেড়ে যায়। বিশেষ ট্রেনে কমপক্ষে ৪০০ জন শিক্ষার্থী রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আর প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী যারা বিশেষ ট্রেনটি চলে যাওয়ার পরও রেল লাইনে অবস্থান করছিলেন তাদেরকে সিল্কসিটি ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী সকল রুটের ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে যাবে বলেও জানান স্টেশন ম্যানেজার।

জানা গেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র ঘিরে বরাদ্দ ট্রেনে করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্র-জনতাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। আবার কর্মসূচি শেষে এসব ট্রেনে করে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। ৮ জোড়া ট্রেনের জন্য প্রায় ৩০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রেনগুলোর ভাড়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পরিশোধ করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর তাদের চিঠিতে কোন কোন জায়গায় ট্রেন দিতে হবে, কখন ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাতে হবে এবং কখন গন্তব্যে ফিরে যাবে, তা উল্লেখ করেছে। সে অনুযায়ী সূচিপত্র তৈরি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। জুলাই অধিদপ্তর তাদের চিঠিতে বলেছে, ট্রেনগুলো বেলা ২টা থেকে ৩টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। কর্মসূচি শেষে রাত ৮-৯টার মধ্যে নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ফিরতি যাত্রা শুরু করবে।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশেষ ট্রেনগুলো পরিচালনার জন্য তারা একটি সূচি তৈরি করেছেন। এর মধ্যে রংপুর থেকে আসা ট্রেনটি যাত্রা শুরু করবে কর্মসূচির আগের দিন, ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায়। এর বাইরে দূরের গন্তব্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী থেকে ৫ আগস্ট ভোরে ট্রেনগুলো ছেড়ে আসবে। ঢাকার আশপাশের জেলা গাজীপুর, নরসিংদী ও ফরিদপুর থেকে ট্রেনগুলো ছাড়বে দুপুরের আগে আগে। অনুষ্ঠান শেষে দূরের গন্তব্যের ট্রেনগুলো আগে ফিরতি যাত্রা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে কাছের গন্তব্যের ট্রেনগুলো ছাড়বে।