মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি শাসনামলে ভারতের ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় উগ্রবাদের আরেকটি দৃষ্টান্ত দেখল বিশ্ব। মহারাষ্ট্রে এক হিন্দু ব্যক্তির বেকারিতে মুসলিম কর্মী নিয়োগের কারণে আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে হিংসাত্মক জনতা। ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ইসলামোফোবিয়ার বিপজ্জনক মাত্রা তুলে ধরেছে ঘটনাটি।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে পুনে জেলার ইয়াভাত গ্রামে। উত্তর প্রদেশের কিছু মুসলিম কর্মচারী স্বপ্নিল আদিনাথ কদমের বেকারিতে কাজ করে। বেকারিটি একজন মুসলিম মালিকের বলে ভুয়া ধারণা থেকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতা হামলা চালায়।

এক মুসলিম যুবকের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এই হামলা চালানো হয়।
তথ্য যাচাই না করেই একটি মসজিদের দিকে যাওয়ার পথে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে উচ্ছৃঙ্খল জনতা বেকারিতে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। এতে টিনের ছাদ ফুটো ফুটো হয়ে যায়। এতেও থামেনি তারা। পরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় হিন্দুত্ববাদীরা।
বেকারির প্রকৃত মালিক স্বপ্নিল কদম বলেছেন, উচ্ছৃঙ্খল জনতা ভিত্তিহীন সন্দেহ এবং সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বশবর্তী হয়ে হামলা করেছে। ‘‘তারা চিৎকার করে বলছিল, আমি কেবল আমার কর্মীদের কারণেই নাকি মুসলিম,’’ সাংবাদিকদের বলেন তিনি।

এই ঘটনা ভারতে হিন্দুত্ববাদী মৌলবাদের উদ্বেগজনক মাত্রা প্রকাশ করেছে। দেশটিতে কেবল মুসলিমরাই নয়, এমনকি হিন্দুরাও মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে মেলামেশার জন্য নির্যাতনের শিকার হয়। বিজেপি-আরএসএসের প্রপাগাণ্ডা কীভাবে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি করেছে আবারও তার প্রতিফলন দেখা গেল। কেবল সন্দেহ এবং ঘৃণা থেকে জীবন ধ্বংস করা হচ্ছে।
স্থানীয় পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি আশঙ্কা করছে, ভারতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ক্রমবর্ধমান মুসলিম-বিরোধী মনোভাব সামাজিক সম্প্রীতিকে বিপন্ন করে তুলছে।
পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনাগুলি একটি বিপজ্জনক পথে ঠেলে দিচ্ছে, যেখানে মোদির সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনীতির উদ্দীপ্ত অন্ধ সাম্প্রদায়িক ঘৃণা নিজ দেশের নাগরিকদের গ্রাস করতে শুরু করেছে। সূত্র: কেএমসি