বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে রোববার ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ আবিয়ান উপকূলে নৌকা ডুবে অন্তত অর্ধশতাধিক অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় দেড়শ যাত্রী বহনকারী নৌকাটি উল্টে গেলে মাত্র ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই ইথিওপিয়ার নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইওএম প্রধান আবদুসাত্তোর এসোয়েভ জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা খানফারের তীরে ৫৪ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে এবং আবিয়ান প্রদেশের রাজধানী জিঞ্জিবারের একটি হাসপাতাল মর্গে ১৪ জনের লাশ নেওয়া হয়েছে।

আবিয়ান নিরাপত্তা ডিরেক্টরেট জানিয়েছে, বড় ধরনের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলছে এবং সাগর তীরে বহু মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। আইওএমের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এই হৃদয়বিদারক প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত এবং অভিবাসীদের জন্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সংস্থাটি আরও জানায়, ‘এ ধরনের ঘটনা দেখিয়ে দেয় কার্যকর সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা কতটা জরুরি, বিশেষ করে অসাধু দালালরা যখন অভিবাসীদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে তাদের বিপজ্জনক যাত্রায় ঠেলে দেয়।’
বিবিসি জানিয়েছে, হর্ন অব আফ্রিকা থেকে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর উদ্দেশ্যে যাত্রাকারী অভিবাসীদের জন্য ইয়েমেন একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। আইওএমের হিসাব অনুযায়ী, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শত শত অভিবাসী নৌকাডুবিতে মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। কেবল ২০২৪ সালেই ৬০ হাজারের বেশি অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছেন।

চলতি বছরের মার্চে ইয়েমেনের ধুবাব জেলার উপকূলে ১৮০ জনের বেশি অভিবাসী বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে যায়; তখন কেবল দুজন ক্রুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় এবং বাকি সবাইকে নিখোঁজ বা মৃত হিসেবে ধরা হয়। আইওএমের ‘মিসিং মাইগ্র্যান্টস প্রজেক্ট’ এর তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে এই পথে ৩,৪০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন, এর মধ্যে নৌকাডুবিতে মারা গেছেন ১,৪০০ জন।