ঢাকা, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫, ৩:৪৬ অপরাহ্ন

সারাদেশের ৭০ জেলে নজরদারি বেড়েছে

ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে ভিআইপি ও ঝুঁকিপূর্ণ বন্দিদের নিরাপত্তায় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। কারাগারের ভেতরে বন্দিদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের ৭০টি কারাগারে বাড়ানো হয়েছে বিশেষ নজরদারি। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের কারাগারে হামলার পর থেকে বাড়তি সতর্কতা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারা অধিদপ্তরের মিডিয়া বিভাগের সহকারী মহাপরির্দশক ( উন্নয়ন) মো. জান্নাত উল ফরহাদ। উল্লেখ্য, ঢাকাসহ সারা দেশের ৭০টি কারাগারে থাকার ব্যবস্থা আছে ৪২ হাজার ৮৮৭ জন বন্দির। তবে এখন আছে ৭৭ হাজার ২৯১ জন।

বিশেষ কারাগার: গত ২১ জুন ঢাকার কেরানীগঞ্জে (ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার-৬) ভিআইপি ও ঝুঁকিপূর্ণ বন্দিদের রাখার জন্য বিশেষ কারাগারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সেখানে ভিআইপি বন্দি রয়েছে ৬৯ জন। আর তাদের তদারকি ও কারাগারের অন্যান্য কাজের জন্য সাধারণ বন্দি রয়েছে ৬৮ জন।

ভিআইপি বন্দি :কারা সূত্র জানায়, বর্তমানে ডিভিশন প্রাপ্ত মোটর বন্দির সংখ্যা ১৫৩ জন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত বিশেষ কারাগারে রয়েছেন ৬৯ জন। যাদের মধ্যে আছেন—আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, সাবেক দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পার্বত্যবিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক এমপি সাদেক খান, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, হাজী সেলিম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কাজী জাফর উল্যাহ, শাহজাহান ওমর, আব্দুস সালাম মুর্শেদী, আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ।

বাড়তি নিরাপত্তা: বিশেষ কারাগারের জেল সুপার মো. তায়েব উদ্দিন বলেন, বিশেষ কারাগারে বন্দিদের ব্যাপারে কোনো থ্রেট নেই। তবে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের নির্দেশনার পর ২৯ জুলাই থেকে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। কারা অভ্যন্তরে বন্দির চলাচলের ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের ব্যাপারে কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

৭০ কারাগারে নজরদারি: কারা অধিদপ্তরের মিডিয়া বিভাগের সহকারী মহাপরির্দশক (উন্নয়ন) মো. জান্নাত উল ফরহাদ বলেন, গোপালগঞ্জের কারাগারে হামলার ঘটনার পর থেকেই দেশের সব কারাগারে নজরদারি ও নিরাপত্তায় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভিআইপি বন্দিরের সবাইকে এখনো বিশেষ কারাগারে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। ৭০ কারাগারের মধ্যে যেসব কারাগারে ভিআইপি ও ঝুঁকিপূর্ণ বন্দি রয়েছেন সেসব কারাগারে বিশেষ কারাগারের মতোই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ট্যাগঃ