ঢাকা, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫, ৩:৫৩ অপরাহ্ন

ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় সোচির তেল ডিপোতে আগুন, রাশিয়ার দাবি

ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান সংঘাত নতুন মোড় নিয়েছে। রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগরের উপকূলীয় পর্যটন শহর সোচির কাছে একটি তেল ডিপোতে রোববার (৩ আগস্ট) স্থানীয় সময় ভোরে বড় ধরনের আগুন লেগেছে। রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের দাবি, এই আগুনের জন্য ইউক্রেনের ড্রোন হামলা দায়ী।

ক্রাসনোদার অঞ্চলের গভর্নর ভেনিয়ামিন কোন্দ্রাতিয়েভ টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কে আঘাত করায় এই আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ১২৭ জন দমকলকর্মী কাজ করছেন। এই ঘটনার কারণে সোচির কাছাকাছি বিমানবন্দরে ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা রাতের বেলায় ৯৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করেছে, যার মধ্যে ৬০টি কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের উপরে ধ্বংস করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মাইকোলাইভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় কমপক্ষে সাতজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি সেবা সংস্থা ছবি প্রকাশ করে দেখিয়েছে, হামলার পর দমকলকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাজ করছেন। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতের বেলায় ৮৩টি ড্রোন এবং সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে ৬১টি ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ১৬টি ড্রোন এবং ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র আটটি স্থানে আঘাত হেনেছে।

রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, সোচির তেল ডিপোর হামলা ছাড়াও ইউক্রেন সপ্তাহান্তে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রিয়াজান, পেনজা এবং ভোরোনেজে অবকাঠামো লক্ষ্য করে একাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ভোরোনেজের গভর্নর জানিয়েছেন, একটি ড্রোন হামলায় চারজন আহত হয়েছেন। এই হামলাগুলো ইউক্রেনের কৌশলগত প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘটনার আগে, গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কিয়েভে একটি মারাত্মক হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং আটটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, যা ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে কিয়েভের উপর সবচেয়ে মারাত্মক হামলাগুলোর একটি।

এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সময়ে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত জুলাইয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৫০ দিনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে হবে, নতুবা রাশিয়ার তেল এবং অন্যান্য রপ্তানির উপর কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে। সোমবার তিনি নতুন করে ১০ থেকে ১২ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করেন, যা চলতি ৮ আগস্ট মেয়াদ শেষ হবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ট্যাগঃ