ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিরবতাকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তিনি বলেছেন, ‘গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা নিয়ে নীরবতা মানে সেই অপরাধে জড়িত থাকা।’
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা (আইডিইএফ) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া এক বক্তব্যে এরদোয়ান এই মন্তব্য করেন। বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তার বক্তব্যের বিস্তারিত।

এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক এখন আর কারো উপর নির্ভর করে না, বরং নিজের প্রযুক্তি আর সক্ষমতার মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে নিজের অবস্থান দৃঢ় করছে। তার ভাষায়, ‘আজ আমরা শুধু একটি প্রতিরক্ষা খাতের উন্নয়ন নয়, বরং একটি জাতির স্বাধীনভাবে এগিয়ে যাওয়ার গল্প দেখছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তুরস্ক নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিক চাপ এবং নৈতিক দ্বিচারিতা অতিক্রম করে নিজস্ব প্রতিরক্ষা খাত গড়ে তুলেছে। ১৯৬০-এর দশকের সাইপ্রাস সংকট কিংবা ১৯৯০-এর দশকের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে তথাকথিত মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে সহায়তা তো পাইনি, বরং তারা যুদ্ধবিমান আটকে রাখত, এমনকি হ্যাঙ্গার ভাড়াও নিত।’
এরদোয়ান স্মরণ করিয়ে দেন, ‘আমাদের দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি মৌলিক যোগাযোগ যন্ত্রও দেওয়া হয়নি। আমাদের আকাশসীমা যখন লঙ্ঘন হচ্ছিল, তখন তারাও নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরিয়ে নিচ্ছিল।’

এসব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তুরস্ক নিজস্ব প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে এবং একটি মানবিক, সক্রিয় পররাষ্ট্রনীতির পথে হাঁটছে বলে জানান এরদোয়ান। তিনি বলেন, ‘তুরস্ক আজ নিজের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে, নিজের প্রযুক্তিতে বিশ্বে পরিচিত হয়ে উঠছে।’
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা আসে গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে। এরদোয়ান বলেন, ‘গাজায় যা ঘটছে, তা স্পষ্টভাবে একটি গণহত্যা। এই অপরাধ নিয়ে যারা চুপ থাকে, তারাও সেই অপরাধের অংশীদার হয়ে দাঁড়ায়।’
এর আগে তিনি একাধিকবার ইসরায়েলকে ‘রক্তপিপাসু সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ আখ্যা দিয়েছেন এবং সিরিয়াকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেছেন। তার মতে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ইসরায়েল, এবং নেতানিয়াহু এই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি।