ঢাকা, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫, ২:২৬ পূর্বাহ্ন

ইউটিউবের মানিটাইজেশন নীতিতে পরিবর্তন, মৌলিক কনটেন্টের গুরুত্ব বাড়ল

অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব তার ‘মানিটাইজেশন’ নীতিতে নতুন আপডেট এনেছে। এর ফলে পুরনো বা অন্যের তৈরি ভিডিও পুনরায় ইউটিউবে ব্যবহার করে অর্থ আয়ের সুযোগ সীমিত হবে। ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে কনটেন্টে অবশ্যই কিছু নতুনত্ব বা মৌলিকত্ব থাকতে হবে।

ইউটিউব এই আপডেটকে ‘অরিজিনাল কনটেন্ট’ বা মৌলিক কনটেন্টকে উৎসাহ দেওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেছে। মানিটাইজেশনের পুরনো নীতির নাম পরিবর্তন করে ‘রিপিটিশাস কনটেন্ট’ থেকে ‘ইনঅথেন্টিকেটেড কনটেন্ট’ করা হয়েছে। এর মানে হলো, যারা শুধু রেডিমেড বা রিপিটিশাস ভিডিও ব্যবহার করে আয় করতেন তাদের কার্যক্রম সীমিত হবে।

তবে, ‘রিইউজড কনটেন্ট’ অর্থাৎ পুরনো ভিডিওতে কিছু নতুন কমেন্টারি বা এডিট করে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ইউটিউবের ‘এডিটোরিয়াল অ্যান্ড ক্রিয়েটর লিয়াজোঁ’ রেনে রিচি জানিয়েছেন, “এটা ছোটখাটো আপডেট, যেখানে রিপিটিশাস কনটেন্টকে চিহ্নিত করে অর্থায়নের অযোগ্য করা হয়েছে। কিন্তু ক্লিপ, কম্পাইলেশন ও রিক্রিয়েশন কনটেন্টের উপর কোন প্রভাব নেই।”

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সৌম্যক সেনগুপ্ত বলেন, “রিপিটিশাস কনটেন্টকে ইনঅথেন্টিক কনটেন্ট হিসাবে পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন ছিল। এটা সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য ভালো পদক্ষেপ।” তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘রিপিটিশাস’ হলো অন্যের তৈরি ভিডিও বিনা পরিবর্তনে ব্যবহার করা, আর ‘রিইউজড’ হলো নতুন ব্যাখ্যা বা অডিও যোগ করে কনটেন্ট তৈরি করা।

তিনি আরো বলেন, “মাসপ্রোডিউসড কনটেন্ট বা টেমপ্লেট ব্যবহার করে বড় পরিসরে ভিডিও তৈরির প্রবণতা বন্ধ করতে চাইছে ইউটিউব।”

এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার করে দ্রুত কনটেন্ট তৈরি করার প্রবণতাকেও ইউটিউব গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। প্রতিষ্ঠানটি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, এআই-র মাধ্যমে তৈরি ছবি বা ভিডিও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে, তবে কনটেন্টের গুণগত মান বাড়াতে এআই ব্যবহারে বাধা নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নীতি আপডেট অনেক নির্মাতাকে উদ্বিগ্ন করেছে কারণ যারা রেডিমেড ভিডিও দিয়ে আয় করতেন তাদের জন্য আয় বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সিমরন কৌর নামে এক গবেষক বলেন, “যারা রেডিমেড ভিডিও ব্যবহার করে লম্বা সময় ধরে আয় করছিল, তাদের জন্য এটা সমস্যা হতে পারে।”

অন্যদিকে শেফ ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর মিল প্যাটেল বলেন, “আমাদের মতো যারা নিজস্ব এবং মৌলিক কনটেন্ট তৈরি করি, তাদের জন্য এটি ভালো সিদ্ধান্ত। যারা সহজ উপায়ে রেডিমেড কনটেন্ট দিয়ে আয় করতেন, তাদের আয় কমে যাবে।”

কলকাতার কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নিরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “ইউটিউবের এই পদক্ষেপ মৌলিক নির্মাতাদের রক্ষা করবে এবং অনুকরণকারীদের নিজস্ব কনটেন্ট তৈরির প্রেরণা দেবে।”

মোটের উপর ইউটিউবের এই নীতিমালা ক্রিয়েটরদের মধ্যে মৌলিক কাজ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি নিউজ

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

ট্যাগঃ