প্রায় ৪০ বছর পর আবারও ইরানে অস্ত্র পাঠিয়েছে চীন। ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে দুর্বল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অভিজ্ঞতার পর, তেহরান এবার বিদেশি সহায়তার দিকে ঝুঁকেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আই এক গোপন গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে জানিয়েছে, বেইজিং ইতোমধ্যে ইরানে সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ব্যাটারি পাঠিয়েছে এবং তেহরান সেই চালান গ্রহণও করেছে।
এই অস্ত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটে ইরান-ইসরায়েল সাম্প্রতিক ১২ দিনের সংঘাতের পর, যা শুরু হয়েছিল ১৩ জুন এবং শেষ হয় ২৫ জুন। সংঘাত চলাকালীন ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, প্রাণ হারান ৯০০’র বেশি মানুষ। এ সময় ইরান উপলব্ধি করে, তার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। আর এই ঘাটতি পূরণেই চীনের সঙ্গে নতুন করে সমরাস্ত্র আমদানির পথে হাঁটে তেহরান।

সউদী আরবের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মিডলইস্ট আই-কে জানান, ইসরায়েলের হামলার পরই ইরান বুঝতে পারে যে শুধু নিজস্ব প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে তার আকাশ প্রতিরক্ষা যথেষ্ট নয়। তাই তারা চীন থেকে উন্নত মানের সারফেস-টু-এয়ার ব্যাটারি আমদানি করে। তবে ঠিক কতটি ব্যাটারি ও ক্ষেপণাস্ত্র এসেছে, তা নিশ্চিত করা যায়নি।
ইরান সাধারণত বিদেশ থেকে অস্ত্র কেনার বদলে অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি করে নিজের সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র। তবে রাশিয়ার কাছ থেকে কিছু উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র ইতোপূর্বে কিনেছে। বর্তমানে দেশটি যে ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তার বড় একটি অংশই রাশিয়ান তৈরি। কিন্তু সাম্প্রতিক ক্ষয়ক্ষতি প্রমাণ করে, সেই প্রযুক্তি পর্যাপ্ত নয়।
চীনের এই নতুন অস্ত্র সহায়তা ইঙ্গিত দেয় যে তেহরান-বেইজিং সম্পর্ক এখন কেবল অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত ও সামরিক দিক থেকেও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। সংঘাত চলাকালীন চীন প্রকাশ্যে ইরানের পক্ষে দাঁড়ায়নি, তবে সমালোচনার বাইরে তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকাও নেয়নি। তাই যুদ্ধশেষে অস্ত্র পাঠানোর এই পদক্ষেপ সম্পর্কের আরও গভীরতায় পৌঁছানোর ইঙ্গিত দেয়।

চীন শেষবার ইরানে অস্ত্র পাঠিয়েছিল আশির দশকে, ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়। সে সময় তারা তেহরানকে ‘এইচওয়াই-২ সিল্কওয়ার্ম’ নামের একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছিল। তার পর থেকে এত দীর্ঘ সময় পর আবার চীনা অস্ত্র ইরানে প্রবেশ করল। তথ্যসূত্র : মিডলইস্ট আই