বিগত কয়েকবছরে দর্শকমহলে ভিন্নরকম এক ছাপ ফেলে যায় নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিরিয়ালটি। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিক একে একে ৪টি সিজন নিয়ে আসে। প্রতিটি সিজনেই একদল ব্যাচেলর দিয়ে তৈরি এই ধারাবাহিকের গল্প দর্শকমহলে দারুণ সাড়া ফেলে।
তবে ধারাবাহিকটির সিজন-৫ এর বিভিন্ন পর্বে অশ্লীলতা, সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক বিচ্যুতির অভিযোগ তুলে নাটকের নির্মাতাসহ সংশ্লিষ্ট অভিনেতাদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে কাজল আরেফিন অমি, অভিনেতা মারজুক রাসেল, জিয়াউল হক পলাশ, সাইদুর রহমান পাভেল, শিমুল শর্মা ও বুম ফিল্মস প্রোডাকশন হাউজকে বিবাদী করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহি উদ্দিন এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি আইনজীবী নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহি উদ্দিনের (মহি শামীম) পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের ৫ম সিজনের ১-৮ পর্বে এমন বহু সংলাপ রয়েছে যা অশ্লীল, ডাবল মিনিং এবং সমাজে বিশেষ করে কিশোর-তরুণদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, নাটকের সংলাপে ‘ডেট’, ‘উনিশ/বিশ’, ‘টাকা হলে শিশা খেতে পারতাম’ ইত্যাদি নিয়ে এমনভাবে কথা বলা হয়েছে যা নীতিনৈতিকতা পরিপন্থি। পাশাপাশি ‘ফিমেল’, ‘কিডনি’, ‘দই’ নাটকের ইত্যাদি ডায়ালগগুলো তরুণদের মুখে মুখে ঘুরছে, যা সামাজিক শালীনতা ও পারিবারিক রুচির পরিপন্থি। এমন সংলাপ নারীদের অবমাননা করে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নাটকটি এখন সব বয়সি মানুষের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। অথচ নাটকের ভাষা, ভাব ও উপস্থাপন একদমই পরিবারবান্ধব নয়। বরং এতে সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশাসন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আইনজীবী মহি উদ্দিন আরও বলেন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ এবং জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী শিশু ও কিশোরদের মানসিক গঠনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন কনটেন্ট প্রচার করা অপরাধ। অথচ এই নাটকে একের পর এক অশ্লীল ও আপত্তিকর সংলাপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে এবং সেগুলো কিশোরদের আচরণ ও ভাষায় স্থায়ী প্রভাব ফেলছে।
নোটিশে সাত কার্যদিবসের মধ্যে নাটকের বিতর্কিত সংলাপ ও ভিডিওগুলো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন নোটিশদাতা।