ফোল্ডেবল ফোন হচ্ছে স্মার্টফোন জগতে একটি নতুন ধারা, যা একই সঙ্গে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের অভিজ্ঞতা দিতে পারে।
ফোল্ডেবল ফোন হচ্ছে স্মার্টফোন জগতে একটি নতুন ধারা, যা একই সঙ্গে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের অভিজ্ঞতা দিতে পারে। তবে এটি কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা জরুরি বলে মনে করেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

প্রথমত, কেন ফোল্ডেবল স্মার্টফোন কিনছেন তা ঠিক করতে হবে। কেনার আগে ভাবতে হবে, শুধু শখের জন্যই কেনা, নাকি এটা কাজেও সাহায্য করবে। একসঙ্গে একাধিক অ্যাপ চালিয়ে মাল্টিটাস্কিং যেমন অফিসের কাজ, ট্রেডিং বা প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়। বড় স্ক্রিনে মাইক্রোসফট অফিস অ্যাপস, চার্ট বা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ব্যবহার অনেক সহজ হয়।
অন্যদিকে কেউ কেউ কেবল ডিভাইসটির আধুনিক ডিজাইন ও বিলাসিতার জন্য কিনতে চায়। ফ্লিপ ফোনগুলো তুলনামূলক সস্তা হলেও সেগুলো মূলত স্টাইল ও ফ্যাশনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। কাজের জন্য তেমন উপযোগী নয়। তবে যারা কনটেন্ট তৈরি করে, তাদের জন্য ফ্লিপ ফোন ভালো হতে পারে কারণ এটি যেকোনো জায়গায় রেখে ভিডিও বা সেলফি তোলা যায়। বুক-স্টাইল ফোল্ডেবল ফোনও এ সুবিধা দেয়, তবে দাম প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়া আছে-
মেরামত খরচ

ফোল্ডেবল ফোন মেরামত করা সাধারণ ফোনের তুলনায় অনেক বেশি জটিল ও ব্যয়বহুল। ভেতরের স্ক্রিন নষ্ট হলে সেটি বদলাতে প্রায় ফোনের এক-তৃতীয়াংশ বা অর্ধেক দাম পর্যন্ত লাগতে পারে। কারণ এতে বিশেষ ধরনের যন্ত্রাংশ থাকে, যা সহজে পাওয়া যায় না এবং মেরামত করতে উচ্চ দক্ষতা লাগে। এটি মেরামত করতে সাধারণত অফিশিয়াল সার্ভিস সেন্টারে পাঠাতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ। তাই ফোন কেনার সময় থেকেই একটি আলাদা মেরামত বাজেট ভেবে রাখা ভালো।
অ্যাপ সাপোর্ট
অনেক অ্যাপ এখনো ফোল্ডেবল স্ক্রিনের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত নয়। ফোল্ড খোলার পর স্ক্রিন প্রায় বর্গাকৃতির হয়। এতে করে ভিডিও দেখার সময় ওপরে ও নিচে কালো বর্ডার দেখা যায় এবং পুরো স্ক্রিনের সুবিধা পাওয়া যায় না। জুম করে ফুল স্ক্রিন করলেও কিছু অংশ কেটে যায়, যা দেখার অভিজ্ঞতা নষ্ট করে। যদিও গুগল এ সমস্যার সমাধানে ডেভেলপারদের উৎসাহ দিচ্ছে, তবে এখনো অনেক অ্যাপ এ ফরম্যাটে ভালোভাবে চলে না।
ফোনগুলো মোটা ও ভারী
ফ্লিপ ফোনগুলো হালকা ও সাধারণ ফোনের মতোই ওজনদার। কিন্তু বুক-স্টাইল ফোল্ডেবল ফোনগুলো ভাঁজ করা অবস্থায় বেশ মোটা ও ভারী হয়। বিশেষ করে যারা ছোট হাতে ফোন ধরে বা পকেটে রেখে ব্যবহার করতে চায়, তাদের জন্য এটা অস্বস্তিকর। ফোনে কেস ব্যবহার করলে তা আরো মোটা হয়। যদিও কিছু ব্র্যান্ড পাতলা ও হালকা ডিজাইন আনছে, যেমন অপ্পো ফাইন্ড এন৫ বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ফোল্ডেবল ফোন। তবে এখনো এটি একটি চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্যাটারির সীমাবদ্ধতা
ব্যাটারির সীমাবদ্ধতা বড় একটি সমস্যা। ভাঁজযোগ্য ফোনে বড় ব্যাটারি রাখা যায় না, কারণ ভেতরে যন্ত্রাংশ (হিঞ্জ) অনেক জায়গা নেয়। ফলে ব্যাটারি ক্ষমতা কম হয় এবং বড় স্ক্রিন চালালে দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। ভবিষ্যতে সিলিকন-কার্বন ব্যাটারি হয়তো এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে, কারণ এসব ব্যাটারি ছোট হলেও বেশি শক্তি ধারণ করতে পারে।
মেকইউজঅব অবলম্বনে