ঢাকা, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫, ৪:৩৯ পূর্বাহ্ন

বাজার পুনরুদ্ধারে স্বল্পমেয়াদী ত্রাণ ও দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত সংস্কারের প্রস্তাব ডিএসইর

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বাজার পুনরুদ্ধারে স্বল্পমেয়াদি ত্রাণ ও দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত সংস্কারের সমন্বয়ে একটি বিস্তৃত প্যাকেজ প্রস্তাব করেন।

তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে তিনি কয়েকটি কর ও ফি-সংক্রান্ত প্রণোদনার কথা বলেন—যেমন, বার্ষিক বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি সম্পূর্ণ মওকুফ, ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের জন্য মূলধন লাভ কর অব্যাহতি, ব্রোকারেজ কমিশন হার ০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৩৫ শতাংশে আনা, ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড আয় করমুক্ত ঘোষণা এবং উৎসে করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার আহ্বান।

রোববার (১৮ মে) ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের সভায় এই এসব প্রস্তাব করেন তিনি। সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী ছাড়াও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) এবং সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল)-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সভায় ডিএসই চেয়ারম্যান বাজার পরিস্থিতির গভীর বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মূলধন ও অর্থবাজারের দুর্বল সমন্বয়, আইপিও প্রক্রিয়ার ধীরগতি, বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থার অকার্যকারিতা, আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে স্বচ্ছতার অভাব, অভ্যন্তরীণ লেনদেন ও দুর্বল তদারকিসহ একাধিক কাঠামোগত সমস্যার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ভেঙে পড়েছে।

তার প্রস্তাবনায় আরও ছিল—তালিকাভুক্ত ও অনালিখিত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, ৫০০ কোটি টাকার বেশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জন্য মূলধন বাজার থেকে অর্থায়ন বাধ্যতামূলক করা এবং সম্পদ-সমর্থিত কর্পোরেট বন্ডের রিটার্ন করমুক্ত রাখা।

ডিএসই চেয়ারম্যান আগামী দুই বছরের মধ্যে আইপিও ও বন্ড ইস্যুর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি তিনি লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ও শক্তিশালী দেশীয়-বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। সব বাজার-সম্পর্কিত কমিটিতে স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তির দাবিও তোলেন তিনি।

সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী অংশগ্রহণকারীদের আশ্বস্ত করেন, সরকার বাজার সংকট সমাধানে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত মিললেও বাজারে তার প্রভাব প্রতিফলিত হতে সময় লাগবে। তিনি জানান, বিএসইসি ইতোমধ্যে পাবলিক ইস্যু নীতিমালা সংস্কার এবং ভাল পারফরম্যান্স করা কোম্পানিগুলোর তালিকা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, শুধু খুচরা বিনিয়োগকারী নয়, ব্রোকারেজ হাউসগুলোও বর্তমানে তীব্র আর্থিক চাপে রয়েছে। তিনি বলেন, বিনিয়োগবান্ধব বাজেট প্রণয়ন, বিও হিসাব ফি হ্রাস, অগ্রিম আয়কর বাতিলসহ তাৎক্ষণিক ও বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত ছাড়া বাজারে আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়।

 

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন