পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড (পর্ষদ) ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার, ৯ এপ্রিল, বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠির মাধ্যমে ব্যাংকটির পর্ষদ বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া আদেশে বলা হয়েছে, “আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক মূলধন ও প্রভিশন ঘাটতি, বিপুল পরিমাণ শ্রেণীকৃত বিনিয়োগ, পূর্ণাঙ্গ ক্ষতি এবং ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা।”

এছাড়া, উল্লেখ করা হয়েছে যে, “ব্যাংক কোম্পানি আইনের অধীনে, ব্যাংক কোম্পানি ও আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”
আদেশে আরও বলা হয়েছে, “আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব সাময়িকভাবে পালন করার জন্য নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।” পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মজিবুর রহমানকে ব্যাংকের নতুন বোর্ড এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকটি ১৯৮৭ সালে আল-বারাকা ব্যাংক নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৪ সালে এটি ‘সমস্যাযুক্ত ব্যাংকে’ পরিণত হয়, এবং ২০০৪ সালে এটি ‘ওরিয়েন্টাল ব্যাংক’ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৬ সালে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ায় ব্যাংকের বোর্ড বাতিল করা হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে, ব্যাংকটির নাম পরিবর্তন করে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক রাখা হয়, তবে এই ব্যাংক এখনও তারল্য সংকটে রয়েছে।

একের পর এক সংকটের পরেও ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। ২০০৮ সালে শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে ব্যাংকটি তারল্য সংকটের মোকাবিলা করছে, যা এখনও বিদ্যমান।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটির সুশাসন এবং আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।