ঢাকা, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৩৪ অপরাহ্ন

ঋণের পরিমাণ বাড়ছে যমুনা ব্যাংকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

যতই দিন যাচ্ছে ততই দুর্বল হচ্ছে যমুনা ব্যাংক পিএলসি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানিটির গত তিন বছর ধরে নন পারফর্মিং লোন (এনপিএল) বা খারাপ ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ব্যাংকটির সক্ষমতা কমে যাচ্ছে, যা প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী কারো জন্যই মোটেই সুখবর নয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, যেকোনো ব্যাংকের এনপিএল পাঁচ শতাংশ বা তার চেয়ে কম হলে সেই ব্যাংককে হেলদি বা স্বাস্থ্যকর ব্যাংক বলা চলে। আর এনপিএল’র পরিমাণ পাঁচ শতাংশের উপরে এবং ১০ শতাংশ নিচে হলে সেই ব্যাংক খারাপের দিকে যাত্রা শুরু করে। আর ১০ শতাংশের উপরে হলেই সেই ব্যাংক খারাপ বা আনহেলদি ব্যাংক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সর্বশেষ হিসাব বছরে (৩১ ডিসেম্বর ২০২৩) যমুনা ব্যাংক লোন দিয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে এনপিএল এসে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। আর এর আগের দুই বছর অর্থাৎ ২০২১ ও ২০২২ সালে এনপিএল ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ ও ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ব্যাংকটির এনপিএল ক্রমাগত বৃদ্ধিকে মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না ব্যাংক খাত বিশেষজ্ঞরা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বিজনেস আই বাংলাদেশকে বলেন, যেকোনো ব্যাংকের এনপিএল ১০ শতাংশের উপরে গেলেই সেই ব্যাংককে খারাপ ব্যাংক বা আনহেলদি বলতে হবে। সেই ব্যাংক আমানতকারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সকলের জন্যই খারাপ ব্যাংক হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই ব্যাংকগুলোর উচিত তাদের এনপিএল যেনো কোনোভাবেই ডাবল ডিজিটে না যায়। সব সময় যেনো সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে। সেদিকে ব্যাংকগুলোর নজর রাখা উচিত।

তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যাংকের এনপিএল যত বাড়বে আমানতকারীদের টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা তত কমবে। তাই এব্যাপারে আমানতকারীদেরও উচিত তারা যেন সব দিক বিবেচনা করে ব্যাংকে টাকা রাখে।

যমুনা ব্যাংকের কোম্পানি সচিব এম.এ. রউফকে একাধিকবার এব্যাপারে জানতে ফোন দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যমুনা ব্যাংকের চলতি বছরে (২০২৪) ক্রমাগতভাবে আয় কমছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ ২০২৪) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ দশমিক ০২ টাকা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন ২০২৪) ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৭৬ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৪) হয়েছে এক টাকা ২০ পয়সা।

উল্লেখ্য, ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের যমুনা ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ৮৮ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ১৬৫টি; যার মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালক, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার রয়েছে যথাক্রমে ৪৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ০ দশমিক ১৮ শতাংশ ও ৪৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ব্যাংকটির সর্বশেষ সমাপনী শেয়ার দর ছিল ১৯ দশমিক ৮০ টাকা।

 

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন