জুলাই মাসে দেশের রাজনৈতিক সংকটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থির হয়ে পড়ে। একই সময়ে বিগত সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের দুর্দশার চিত্র বেরিয়ে আসে। এতে দেশের ব্যাংকিং খাতে গ্রাহকের আস্থা সংকট শুরু হয়। এত সংকটেও চলতি বছরের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তৃতীয় প্রান্তিকে পুঁজিবাজারের বেশিরভাগ ব্যাংক ভালো মুনাফা করেছে।
১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ডিএসই সূত্র জানায়, দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে ৩৬টি ব্যাংক তালিকাভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিকে ১৭টি ব্যাংকের নিট মুনাফা বেড়েছে। ১০টির কমেছে। আর চরম সংকটে থাকা ৯টি ব্যাংকে লোকসান হয়েছে।
মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়া ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে ব্রাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
ব্রাক ব্যাংক

তৃতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংক ১ হাজার ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির মুনাফা বেড়েছে ৪২৯ কোটি ২১ লাখ টাকা বা ৭৪ শতাংশ।
আলোচ্য প্রান্তিকে ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি সমন্বিত আয় করেছে ১ টাকা ৯৭ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ২২ পয়সা।
পূবালী ব্যাংক
পূবালী ব্যাংক ৪৪৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির মুনাফা বেড়েছে ১১১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ৩৩ শতাংশ।
তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি সমন্বিত আয় করেছে ৭ টাকা ৫৮ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ৫ টাকা ৩০ পয়সা।
এনসিসি ব্যাংক
এনসিসি ব্যাংক চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ২০১ কোটি ৫১ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির মুনাফা বেড়েছে ১০৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বা ১০৮ শতাংশ।
আলোচ্য প্রান্তিকে ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি সমন্বিত আয় করেছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ৮৭ পয়সা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ জানান, যেসব ব্যাংকের ওপর গ্রাহকের আস্থা আছে, সেসব ব্যাংকেই মুনাফা বেড়েছে। কারণ দুর্বল ব্যাংকের আমানতও এসব ব্যাংকে চলে এসেছে।মূলত সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ, বৈদেশিক বাণিজ্য থেকে আয় এবং সুদহারের সীমা প্রত্যাহারে ব্যাংকগুলোর আয় বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।