সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বাড়াচ্ছে। সর্বশেষ ২২ অক্টোবর সুদহার ৯.৫০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। মূলত মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে এর ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদে ব্যাংকগুলো লাভবান হলেও, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ঋণনির্ভর ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ও বিনিয়োগের স্থবিরতা
ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়ীরা বাড়তি খরচের চাপে পড়ছেন। বর্তমানে সুদের হার ১৪-১৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ২০২০ সালে নির্ধারিত ৯ শতাংশ হারের চেয়ে অনেক বেশি। এতে ছোট, মাঝারি ও বড় ব্যবসায়ীদের নতুন বিনিয়োগের পরিকল্পনা স্থগিত করতে হচ্ছে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিক্রিতে ধস নেমেছে।
নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতি ও সংকটপূর্ণ বিনিয়োগ পরিস্থিতি
দীর্ঘদিন ধরে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। সুদহার বৃদ্ধির পরও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না, বরং আমদানি ও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
বাজারে অর্থের সরবরাহ সংকোচনের প্রয়াস
অর্থনীতিবিদদের মতে, সুদহার বৃদ্ধি বাজারে অর্থের যোগান কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সুদহার বৃদ্ধির ফলে ব্যাংক ঋণের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে হলেও বিনিয়োগ সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।