ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫, ৭:৫৪ অপরাহ্ন

বিএসইসির সাথে বৈঠকে নতুন দাবি আনলেন আন্দোলনকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি দেশের পুঁজিবাজারে তীব্র দরপতনের প্রতিবাদে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ-মানববন্ধন করে। ওই সময় বিনিয়োগকারীরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করে। তবে বিনিয়োগকারীদের এ আন্দোলন সফল হয়নি; পরবর্তীতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের সাথে তারা আলোচনায় বসে।

বুধবার (০৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাথে বিএসইসির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা ইতিপূর্বে তাদের দেওয়া দাবির সাথে আলোচনায় উঠে আসা সুপারিশের কোনো সামঞ্জস্য ছিলো না। এমনকি চেয়াম্যানের পদত্যাগের যৌক্তিক কোনো দাবি তারা উপস্থাপন করতে পারেনি।

ইতিপূর্বে কমিশনের নেওয়া কঠোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেও তারা বৈঠকে সেগুলো প্রত্যাহারে দাবি পেশ করেনি। অভিযোগ রয়েছে, কমিশনের নেওয়া পদক্ষেপে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের একটি অংশ আন্দোলনকারীদের ইন্ধন যুগিয়েছে। এছাড়াও এই আন্দোলনকে গতশীল করতে শেয়ার কারসাজিকারকদের একটি বড় অংশের ভুমিকা ছিলো। একটি মহলের রাজনৈতিকভাবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করতে এই আন্দোলনকে একটি ইস্যু হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা ছিলো বলেও মনে করেন অনেকেই। তাদের আলোচনায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দাবি-দাওয়াসমূহ সঠিকভাবে উঠে আসেনি বলে অভিমত বাজার সংশ্লিষ্টদের।

তবে তারা পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থা এবং বাজার সংস্কারের নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। সভায় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য তাদের সুপারিশ তুলে ধরেন।

বৈঠকে বিনিয়োগকারীরা যেসব সুপারিশ তুলে ধরেন- বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের জেড ক্যাটাগরি সংশ্লিষ্ট নিয়ম কানুনের সংস্কার এবং লভ্যাংশ না দেওয়াসহ নন-কমপ্লায়েন্সের ফলে জেডে প্রেরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও তার কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, সশরীরে কোম্পানির এজিএম করার নিয়ম পুনর্বহাল করা, বাজারে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ আনয়ন ও বিনিয়োগকারী বান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেন।

এর আগে রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে গত ৩ অক্টোবর বিনিয়োগকারীরা মতিঝিল থেকে আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনের সামনে অবস্থান করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি ভবনে তালা লাগিয়ে দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের বৈঠকের আহ্বান জানায়।

প্রসঙ্গত, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তত ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক জরিমানা করে। এছাড়া ৬০টি বিও অ্যাকাউন্ট জব্দ, অন্তত ২৪টি কোম্পানির অনিয়ম ও দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। পাশাপাশি কমিশনের বিগত সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও বাংলাদেশের আর্থিক খাতে অনিয়মের সঙ্গে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মালিকানাধীন কোম্পানি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলমান।

 

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন