শেয়ার কারসাজির অভিযোগে হিরু ও তার সহযোগীদেরকে বিভিন্ন সময় জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া আবুল খায়ের হিরু আইপিডিসি, বিডিকম অনলাইন, ওয়ান ব্যাংক, এশিয়া ইনস্যুরেন্স, গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স ঢাকা ইনস্যুরেন্সের শেয়ার সহ একাধিক শেয়ার কারসাজির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সাল থেকে হিরু ও তার সহযোগীরা এই কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে।
তাঁর কারসাজি করা শেয়ারগুলোর মধ্যে আলোচিত ৪ কোম্পানি বর্তমানে একছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দরে লেনদেন হচ্ছে পুঁজিবাজারে।

আলোচিত ৪ কোম্পানি হচ্ছে- জেনেক্স ইনফোসিস, ফরচুন শু, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুসন্ধানে এমন চিত্র উঠে আসে।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে কারসাজি করে এসব শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি করে হিরু ও তাঁর সহযোগীরা।শেয়ার কারসাজির অভিযোগে হিরু ও তার সহযোগীদেরকে বিভিন্ন সময় জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

হিরুর কারসাজি করা ৪ কোম্পানির বর্তমান আর্থিক চিত্র নিচে তুলে ধরা হলো:
জেনেক্স ইনফোসিস
জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড বাংলাদেশের বৃহত্তম কল সেন্টার পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগে গত মার্চ মাসে বিশিষ্ট শেয়ার ব্যবসায়ী আবুল খায়ের হিরু ও সহযোগীদের ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে বিএসইসি। অভিযোগ রয়েছে কোম্পানিটির ব্যবসা ও আর্থিক অবস্থার উন্নতির কারণে নয়, বরং কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার দর ৩৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৭৬ টাকা ৭০ পয়সায় উঠানামা করে। গত ১ মাসের মধ্যে (২৯ আগস্ট-২৬ সেপ্টেম্বর) শেয়ারটির দর ৪৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে সর্বশেষ ৩৮ টাকায় লেনদেন হয়।
২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৫৪ পয়সা।
ফরচুন সুজ
পুঁজিবাজারে চামড়া খাতের কোম্পানি ফরচুন সুজের শেয়ার কারসাজিতেও রয়েছে হিরুর নাম।
জানা গেছে, বেশ কয়েকটি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব ব্যবহার করে এক বিও থেকে আরেক বিওতে শেয়ার স্থানান্তরের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে কোম্পানিটির দাম বাড়ানো হয়েছে। যাতে টানা মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা দেখে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে প্রলুব্ধ হন।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৭৫ টাকা ৭০ পয়সায় উঠানামা করে। আর গত ১ মাসে (১ সেপ্টেম্বর-২৬ সেপ্টেম্বর) ফরচুনের শেয়ার দর ৩১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৯ টাকা ৮০ পয়সা কমে সর্বশেষ ২১ টাকা ৬০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ২৩ পয়সা।
এনআরবিসি ব্যাংক
এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজিতে রিয়েলাইজড ১৫ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং আনরিয়েলাইজড ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মুনাফা করেছে বলে ডিএসইর এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১৬ টাকা ৮০ পয়সায় উঠানামা করে। আর গত ১ মাসের মধ্যে শেয়ারটি ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৯ টাকা ৮০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১১ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২৯১ পয়সা।
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স
সর্বশেষ প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি নিয়ে আবুল খায়ের হিরুকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৭৪ টাকা ৩০ পয়সায় উঠানামা করে। আর গত ১ মাসে ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩৮ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়।
সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৮২ পয়সা।