ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত কোম্পানীর সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও সাবেক পরিচালক এম এ খালেক গ্রেফতার

271

ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের জালিয়াতির মাধ্যমে লুন্ঠিত অর্থ আদায়ের জন্য কোম্পানী কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার মুল অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম ও সাবেক পরিচালক এম এ খালেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ১৩ই সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মামলার শুনানি শেষে কোম্পানীর বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম কে দু’দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেছে। এছাড়া বীমা কোম্পানীটির সাবেক পরিচালক এম এ খালেক এবং তার ছেলে রুবায়াত খালেককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

মামলার বিবরণে জানা যায় যে, ফারইষ্ট লাইফের সাবেক পরিচালনা পর্ষদের সভার কার্যবিবরণীতে বর্ণিত আলোচ্যসূচি ও সিদ্ধান্তের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এক্সট্রাক্ট বা প্রতিলিপি তৈরী ও ইস্যু করে কোম্পানীর বিভিন্ন ব্যাংকে রাখা এমটিডিআর/আমানত সাবেক পরিচালক ও চেয়ারম্যান জনাব এম এ খালেক ও নজরুল ইসলাম তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লোনের বিপরীতে জামানত দিয়ে এবং উক্ত জামানত বাবদ কোম্পানীর মোট গঞউজ ৮১৬ কোটি টাকা ব্যাংক কর্তৃক সমন্বয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

উক্ত গঞউজ এর হালনাগাদ মুনাফাসহ ১৩৩২ কোটি টাকা দাড়িয়েছে। উক্ত দুই সাবেক পরিচালক ও চেয়ারম্যান তাদের নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে কম মূল্যে জমি ক্রয় করে সেই জমি কোম্পানীর বরাবর বেশি দামে বিক্রয় করে প্রায় ৬৬৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ২৮৭ কোটি টাকা উক্ত পরিচালকগণ আত্মসাৎ করেছে। এছাড়ার কোম্পানীর বিভিন্ন ক্রয় লেনদেনের মাধ্যমে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

জনাব নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেকের এই সমস্ত অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন বিগত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, জনাব নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেকের নিয়ন্ত্রনাধীন পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়ে স্বাধীন পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে এবং উল্লিখিত অনিয়ম সমুহ উৎঘাটনের জন্য ইঝঊঈ ও ওউজঅ কর্তৃক একাধিক নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

উক্ত বিভিন্ন নিরীক্ষার মাধ্যমে অদ্যাবধি প্রায় ৪৫০০ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়ম উদঘাটিত হয়েছে যার সাথে সরাসরি উক্ত পরিচালকরা জড়িত ছিলেন।
উক্ত অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাৎ প্রক্রিয়ায় কোম্পানীর তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ হেমায়েত উল্যাহ্ ও শেখ আব্দুর রাজ্জাক সহ কতিপয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এবং এই অনিয়ম প্রক্রিয়ায় সহযোগী ছিলেন বিধায় উক্ত মামলায় তাদের ও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন জনাব শাহরিয়ার খালেদ, রুবাইয়াত খালেদ, মোঃ তানভিরুল হক, নুর মোহাম্মদ ডিকন যারা উক্ত কোম্পানীর পরিচালক হিসাবে কর্মরত থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করেন এবং নিজেরা ও অর্থ আত্মসাৎ করেন। জনাব আলী হোসেন সাবেক সিইও, জনাব একরামুল আমিন সাবেক সিইও, জনাব মোঃ আলমগীর কবির সিএফও ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জনাব কামরুল হাসান খান এএমডি এন্ড ইনচার্জ অর্থ ও হিসাব (একক বীমা), জনাব শেখ আব্দুর রাজ্জাক ইভিপি এন্ড ইনচার্জ ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্ট, জনাব মোঃ কামাল হোসেন হাওলাদার জেইভিপি হেড অব ইন্টারনাল অডিট এন্ড কমপ্লায়েন্স ডিপার্টমেন্ট, জনাব মোহাম্মদ মাকবুল এলাহি, এফএভিপি ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্ট, উল্লেখিত উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অর্থ আত্মসাৎ প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন এবং নিজেরা ও অর্থ আত্মসাতে অংশিদারী হন।