শংকা কাটিয়ে ঘুরে দাড়াচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। পরিবর্তিত কিছু পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশের অনুকূলে। এর মধ্যে অন্যতম প্রতিযোগী মিয়ানমারে উত্তাল সামরিক পরিস্থিতি। আরেক প্রতিযোগী ভারতে অতিমারি করোনার মারাত্মক প্রকোপ। এ দুটি দেশ থেকে ক্রেতাদের রপ্তানি অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তর হচ্ছে। প্রধান বাজার ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে। চাহিদা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এর সুফল পাচ্ছে দেশের পোশাক খাত।
তাছাড়া, আরও কিছু ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে দেশের পোশাক খাত। রানা প্লাজা ধসের পর ক্রেতাদের তত্ত্বাবধানে ব্যয়বহুল সংস্কারের সুফলও পাচ্ছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি নিরাপদ ও উন্নত পরিবেশে পোশাক উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক নৈতিক মান নিরীক্ষা (এথিক্যাল অডিট) সূচকে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। কোনো কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক মান যাচাইয়ে এথিক্যাল অডিট পরিচালনা করে চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কিউআইএম। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্যবস্থাপনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকেঞ্জির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাক কারখানার নিরাপদ পরিবেশ এবং সরবরাহ চেইনে দায়িত্বশীলতা বিবেচনায় বাংলাদেশের পোশাক খাত এখন প্রথম সারির।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এখন সারাবিশ্বে নিরাপদ শিল্পের রোল মডেল। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) ‘লিড প্লাটিনাম’ সনদ পেয়েছে দেশের ১৪৩টি পোশাক কারখানা। শিল্পপ্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি কারখানার মধ্যে ৩৯টিই বাংলাদেশের। এসবের সুফল পাচ্ছে পোশাক খাত। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সব শ্রমিকের জন্য টিকা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে পোশাক রপ্তানি থেকে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের শেষ ১১ মাসে দুই হাজার ৮৫৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। দেশের মুদ্রায় তা প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা।
