ঢাকা, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

আবরারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ছোট ভাইর আবেগঘন স্ট্যাটাস

বহুল আলোচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যার এক বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আবরারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ সামাজিক মাধ্যমে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। বাংলাদেশ জার্নালের পাঠকদের জন্য তার সেই স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-

‘ঠিক এক বছর আগে আজ ৬ অক্টোবর ভাইয়া ঢাকাতে যায়। আম্মু নিজে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসছিল। এরপর মাত্র ১৩-১৪ ঘণ্টার মধ্যে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। ২০ ঘণ্টা পরই বাসায় আসে মৃত্যুর সংবাদ।

সেদিন সকালে যাওয়ার আগে আম্মু আমাকে ডেকেছিল। ভাইয়া চলে যাচ্ছে ওঠ। কিন্তু ও বলে থাক, অনেক রাতে ঘুমাইছে ঘুমাক। সাব্বি আমি চলে গেলাম। তুই বেশিদিন থাকিস না, তাড়াতাড়ি চলে আসিস।

আর দেখা হয়নি। ঢাকা ফেরাও হয়নি।

যাওয়ার আগে রাতে আম্মুকে ও বলেছিল, আম্মু অনেক ছারপোকা কামড়ায়। পিঠে একটু হাত বুলিয়ে দেও তো।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারতে হওয়া চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারের বাইরে থাকা ৬ জনের মধ্যে ৫ জনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছে তিনজন।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলো- মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদুজ্জামান জিসান ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম।

এজাহারবহির্ভূত ৬ জন হলো– ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও মোস্তবা রাফিদ।

পলাতক তিন আসামি হলো– মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন