ঢাকা, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

বিজেএমসির কাছে পাওনা ২৬৫ কোটি টাকা

চার অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে সরবরাহ করা কাঁচা পাটের দাম বাবদ বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কাছে ‘বকেয়া’ ২৬৫ কোটি টাকা আদায়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পাট ব্যবসায়ী সমিতি।

এর অংশ হিসেবে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীতে বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সমিতির নেতারা। গতকাল রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিলগুলোর কাছে পাট ব্যবসায়ী ও চাষিদের বকেয়া পাওনা ২৬৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে বলে জানান সমিতির আহ্বায়ক শামীম আহমেদ মোড়ল।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিলে পাট সরবরাহ করা বেশির ভাগ এজেন্সিতে প্রান্তিক চাষিরা রয়েছেন। আর মিলগেটে পাট সরবরাহকারীদের বেশির ভাগই ব্যাংকের কাছে ঋণগ্রস্ত। পাওনা টাকা না পাওয়ায় অর্থসংকটে ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংক ঋণ ও বিভিন্ন মোকামে ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীদের বকেয়া পাওনার চাপে আমরা দিশেহারা।

সরবরাহ করা পাট থেকে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে বিজেএমসি তাদের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের মজুরি এবং অন্যান্য খরচ মিটিয়ে এলেও কাঁচা পাট সরবরাহকারীদের বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে ‘উদাসীনতা’ দেখিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা টিপু সুলতান বলেন, পাটপণ্য বিক্রি করে বিজেএমসি সম্প্রতি ৩৩২ কোটি টাকা আয় করেছে। এই টাকা থেকেও ব্যবসায়ীদের পাওনা পরিশোধ করা যায়। বিজেএমসির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন জানালেও কোনো আশ্বাস মেলেনি। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা সংকটে পড়েছেন জানিয়ে গত ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও পেশ করেছিলেন সংগঠনের নেতারা।

শামীম আহমেদ বলেন, ১৮ আগস্ট থেকে আমরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে অনশনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পাটচাষির সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। প্রতি বছর এখন সাড়ে সাত থেকে আট লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়, যা থেকে প্রায় ৮০ লাখ বেল পাট পাওয়া যায়।

দেশে উৎপাদিত পাটের প্রায় ৫১ শতাংশ পাটকলগুলোয় ব্যবহার হয়। ৪৪ শতাংশের মতো কাঁচা পাট রপ্তানি হয়। আর ৫ শতাংশ লাগে ঘর-গৃহস্থালি ও কুটিরশিল্পের কাজে। ক্রমাগত লোকসান দিয়ে আসা বিজেএমসির আওতাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬ পাটকল গত মাসে বন্ধ ঘোষণা করে প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিককে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের’ মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হয়। সরকার বলছে, আধুনিকায়ন করে এসব পাটকল সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে নতুন করে চালু করা হবে। পুনরায় চালু হলেও পাওনা টাকা না পেলে আগামীতে পাটকলগুলোয় আর পাট সরবরাহ করা হবে না বলে বিজেএমসিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন