ঢাকা, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫, ৫:০২ অপরাহ্ন

এসিআই মটোরসে ১২৬ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ

দেশে কৃষি যন্ত্রপাতি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এসিআই মোটরসে বিনিয়োগ করছে নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগ ব্যাংক এফএমও। বিনিয়োগের পরিমাণ দেড় কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৬ কোটি টাকা। এ অর্থ বিনিয়োগ করে এফএমও এসিআই মোটরসের ১৭ শতাংশের মতো শেয়ারের মালিক হবে।

নতুন এই বিনিয়োগের খবরটি এসিআই লিমিডেট তাদের ওয়েবসাইটে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হিসেবে দিয়েছে। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার এসিআই লিমিডেটের পরিচালনা পর্ষদ এই বিনিয়োগের অনুমোদন দেয়। অহস্তান্তরযোগ্য প্রতিটি ১০০ টাকার শেয়ারে এসিআই লিমিটেড প্রিমিয়াম নিয়েছে ৪৪০ টাকা।

এসিআই লিমিটেড বলেছে, এই অর্থ ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও উৎপাদন ক্ষমতার সম্প্রসারণে ব্যবহার করা হবে।

এসিআই মোটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফ এইচ আনসারী বলেন, ‘কৃষিযন্ত্র ও মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানা করতে আমাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হতো। ব্যাংকের ঋণের সুদের হার বেশি। বিকল্প হিসেবে আমরা অংশীদার নিয়েছি।’

এফ এইচ আনসারী আরও বলেন, ‘আমাদের জন্য ভাবমূর্তি বড় বিষয়। নেদারল্যান্ডসের একটি ব্যাংকের বিনিয়োগের মাধ্যমে দরজা খুলল। ভবিষ্যতে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করা যায়।’

এসিআই মোটরস জাপানের ইয়ানমারসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কৃষি যন্ত্রপাতির আমদানি করে। তাদের নিজস্ব কৃষিযন্ত্রের কারখানাও রয়েছে। এ ছাড়া জাপানের ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলের কারখানা করেছে তারা। বাণিজ্যিক যান ও নির্মাণ সরঞ্জামের ব্যবসাও রয়েছে তাদের।

এফএমওকে অংশীদার হিসেবে নেওয়ার পর এসিআই মোটরসে এখন এসিআই লিমিডেটের শেয়ার থাকবে ৫২ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা আগে ৬৫ শতাংশ ছিল। এসিআই মোটরসে এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলা, এসিআই ফর্মুলেশনস ও এফ এইচ আনসারির মালিকানা রয়েছে।

এফএমও অংশীদার হওয়ার পর এসিআই মোটরসের পরিচালনা পর্ষদে তাদের একজন প্রতিনিধি যোগ দেবেন। তিনি ব্রুমারস অ্যান্ড পার্টনার্স বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) খালিদ কাদির হতে পারেন বলে জানা গেছে।

এফএমও ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত। ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বলছে, ব্যাংকটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক নেদারল্যান্ডস সরকার। ৮৫টির বেশি দেশে এফএমওর বিনিয়োগ রয়েছে।

এসিআই মোটরস ২০১৯–২০ অর্থবছরে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। চলতি ২০২০–২১ অর্থবছরে তাদের পণ্য বিক্রির লক্ষ্য দেড় হাজার কোটি টাকা।

আর এসিআই লিমিটেড ২০১৯–২০ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক, অর্থাৎ গত জানুয়ারি–মার্চ সময়ে প্রায় ১ হাজার ৮৪১ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি। আলোচ্য সময়ে লোকসান হয়েছে ৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকার মতো। তবে লোকসানের পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।

লোকসানের কারণ হিসেবে এসিআই লিমিটেড অবচয় বাবদ পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়া ও এসিআই হেলথকেয়ারের ‘প্রি–কমার্শিয়াল এক্সপেনস’–এর কথা উল্লেখ করেছে। এসিআই হেলথকেয়ারের অধীনে কারখানা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ওষুধ রপ্তানির জন্য। এটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে পুঁজিবাজারে এসিআই লিমিটেডের শেয়ারের দাম বাড়ছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে এসিআই লিমিটেডের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৬৮ টাকা। গত বৃহস্পতিবার তা সর্বোচ্চ ২৭৩ টাকা দরে লেনদেন হয়।

নিউজটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন