লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল পুরো শহর। এমনকি বিস্ফোরণস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত ঘরবাড়ির দরজা-জানালা উড়ে গেছে।
দেশটি থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়। সেখানকার মানুষ এ ঘটনাকে ভূমিকম্প মনে করেছিল।

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার বিশাল এলাকা চুর্ণবিচুর্ণ করে দেয়া এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৩৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫ হাজার।
তিন লাখের মতো মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে রাস্তায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। বুধবার থেকে দেশটিতে তিন দিনের শোক পালন চলছে।
বৈরুতের বন্দরের একটি রাসায়নিকের গুদাম থেকে ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।

গুদামটিতে প্রায় ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত ছিল। ছয় বছর ধরে কোনো ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই এত বিপুল রাসায়নিক দ্রব্য সেখানে পড়ে ছিল।
লেবাননের ভয়াবহ এ বিস্ফোরণকে পারমাণবিক বোমার সঙ্গে তুলনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিস্ফোরণের মাত্রা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এটিএফ বিস্ফোরক তদন্তকারী কর্মকর্তা অ্যান্থনি মে বলেন, এটা কিছুটা এক কিলোটন ওজনের পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের মতো ছিল।
তিনি বলেন, এই বিস্ফোরণে পারমাণবিক কোনো পদার্থ ছিল না। কিন্তু সেখানে যে কম্পন তৈরি হয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেগুলো একটি ছোট আকারের পারমাণবিক বোমার সমতুল্য।
যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা শহরে যে পারমানবিক বোমা ফেলা হয়েছিল, সেটির দশভাগের এক ভাগ শক্তি ছিল বৈরুত বিস্ফোরণে।
তারা বলছেন, বৈরুতের এই বিস্ফোরণ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পারমানবিক-বহির্ভূত বিস্ফোরণ।
এদিকে বৃহস্পতিবার হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৫ বছর পূর্ণ হলো। জাপানের এই নগরীতেই ফাটানো হয় প্রথম পারমাণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। যুক্তরাষ্ট্রের সেই আক্রমণে প্রাণ গিয়েছিল লক্ষাধিক মানুষের, আহত লাখ লাখ।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1276963189312988&id=100009979577082