খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে সরকার বিভিন্ন সুবিধা দিলেও চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে শিল্পে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৭০৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
করোনাভাইরাসে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাতে রয়েছে সুশাসনের অভাব। সার্বিক পরিস্থিতিতে আগামী মাসগুলোয় খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এতে ব্যাংক খাত হয়ে উঠবে আরও অস্থিতিশীল। খেলাপিদের তালিকা করার পরিবর্তে একটি নীতিমালা তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিষয়টিকে হিসাব কারসাজি বলা যেতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপে ব্যাংক খাত আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে শিল্প খাতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৮৩১ কোটি ১২ লাখ টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এ পরিমাণ ছিল ৪৫ হাজার ১২৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। বিভিন্ন ধরনের নীতিমালা শিথিল করেও মন্দ ঋণ বৃদ্ধির হার দীর্ঘমেয়াদে কমাতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৪ হাজার ৪১৬ কোটি ১ লাখ টাকা থেকে ৯ হাজার ২৮৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছিল ৪৫ হাজার ১২৭ কোটি ২৯ লাখ টাকায়। এতে কেবল ওই প্রান্তিকটিই সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল।
২০১৯ সালের ১৬ মার্চ ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিতে নীতিমালা শিথিল করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে অনুযায়ী, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ পেয়েছেন খেলাপিরা। যা আগে ছিল ১৫ শতাংশ। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিল্প খাতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের চেয়ে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকেই অগ্রাধিকার দেয় বেশি। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংক খাত থেকে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ৭৬ হাজার ১২৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা পেয়েছে। এ পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেশি। ওই সময় তারা ৬৯ হাজার ৮০৯ কোটি ৪ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছিল।

অন্যদিকে ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার হার কমেছে যথাক্রমে ২৩ দশমিক ২৩ ও ২২ দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭ হাজার ৭৬৮ কোটি ৮৪ লাখ ও ৭ হাজার ৭৬৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
সূত্র: দেশ রূপান্তর