চীনভিত্তিক বাইটডান্স শর্ট ভিডিও তৈরির সোস্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। পাশাপাশি টিকটকের নিরাপত্তা দুর্বলতার কারণে বিশ্বজুড়ে তীব্র বিতর্কের মুখে রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই মোবাইল পেমেন্ট সেবা খাতে নাম লিখিয়েছে টিকটকের প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠান বাইটডান্স। মূলত ই-কমার্স ব্যবসা জোরদারের অংশ হিসেবে চীনে ‘ডুইন পে’ নামে মোবাইল পেমেন্ট সেবা চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর রয়টার্স।
চীনের মোবাইল পেমেন্ট সেবা খাতে আধিপত্য বিস্তার করে আছে অ্যান্ট গ্রুপের ‘আলি পে’ এবং টেনসেন্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের ‘উইচ্যাট পে’। এ দুই সেবার সঙ্গে স্থানীয় বাজারে তৃতীয় পক্ষের পেমেন্ট সেবা হিসেবে প্রতিযোগিতা করবে ডুইন।
বাইটডান্সের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝ্যাং ইমিং চীনে নিজের প্রতিষ্ঠানের পেমেন্ট সিস্টেম উন্নয়ন করেন। গত বছর উহান হেজং ইবাও টেকনোলজি কোম্পানিকে অধিগ্রহণের মাধ্যমে নিজস্ব পেমেন্ট সেবা উন্নয়নের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। হেজং ইবাও ২০১৪ সালে চীনের সেন্ট্রাল ব্যাংকের কাছ থেকে তৃতীয় পক্ষের পেমেন্ট সেবা সরবরাহের লাইসেন্স পায়।
বাইটডান্স নিয়ন্ত্রিত টিকটক নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি আরো কয়েকটি দেশে চাপে রয়েছে। তথ্যনিরাপত্তা দুর্বলতার অভিযোগে টিকটক নিষিদ্ধ করতে গত বছর এক নির্বাহী আদেশে সই করেছিলেন তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে টিকটকের প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠানকে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির পরামর্শ দেয়া হয়। ওই সুযোগ কাজে লাগাতে জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম কিনতে আলোচনা শুরু করে মাইক্রোসফট। তবে শেষ পর্যন্ত টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম বিক্রি করতে ওরাকল করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বাইটডান্স।
গত বছর ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধে নির্বাহী আদেশে সই করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম স্থানীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরে ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ব্যবসা পরিচালনার পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালিকানা হস্তান্তরে ব্যর্থ হলে দেশটিতে আর কোনো আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না টিকটক কর্তৃপক্ষ বলে নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়। বিষয়টি এখন আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। ওই সময় টিকটক নিষিদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ওই সময় টিকটকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ব্যবসা ধ্বংস করতে অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এমনকি তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম বিক্রি করতে বাধ্য করার মতো পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তথ্য নিরাপত্তার অজুহাতে দেশটিতে তাদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে তারা আইনের আশ্রয় নেয় এবং আদালত নিষেধাজ্ঞার আদেশে স্থগিতাদেশ দেন।